Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

ওয়ান ফর মাই সৌল

Posted on February 5, 2024February 5, 2024

“বাড়াগুলো হাতে হাতে লন তো। বাড়াগুলো হাতে হাতে লন!”
এটা ছিল আমার একটা সময়ের অ্যালার্ম ক্লক। এই ডাকেই ঘুম থেকে উঠতে হতো। ওই সময়টায় আমার সবটা সময় যেত বাসে। এই আমি রাতে চট্টগ্রাম যাচ্ছি। পরদিন রাতে ঘুমাচ্ছি রাজশাহীর বাসে। তারপর রাতে ঘুমাচ্ছি ঢাকার বাসে। চাকরি ছিল চট্টগ্রামে, রাজশাহী থেকে কাগজ আনতে হবে, ঢাকায় থাকে যাকে ভালোবাসি। নরসিংদীতে পরিবার।
হোয়েন আই লুক ব্যাক – একটা জিনিসই আমার ভালো লাগে নিজের ব্যাপারে।
পৃথিবীতে দু’ধরণের মানুষ থাকে।

এক. যারা পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ায়।
একটা বাড়িতে উঠলো। ওই বাড়ির অন্য ফ্ল্যাটের একটা মেয়ের সাথে প্রেম করবে। ওই বাড়ির সবার সাথে বন্ধুত্ব করবে। পারলে ওই বাড়িতেই চাকরি করবে। পরিবেশ যেটাতে ঢুকলো ওর সাথে মানিয়ে ফেলা। সবাই পানের পিক ফেলা খারাপ বলেছে বলে পিক ফেলবে না।

দুই. পরিবেশকে যারা নিজেদের মতো বানাবে।
থাকবে উত্তরায় কিন্তু মিরপুরের মেয়ে ভালো লাগলে তার সাথেই প্রেম করবে। বন্ধু হয়তো থাকবে যাত্রাবাড়ি। চাকরি হবে সাভারে। সবখানে যাবে। বাস, ভীড়, সময়, গ্যাঞ্জাম চোদার সময় এদের নাই। প্রথম কথা হচ্ছে যা পছন্দ করবে তার দিকে যাবে। যাওয়া যাবে কি না দেখে কিছু পছন্দ করবে না। পানের পিক ফেলা খারাপ যে সমাজে সেখানে পিক ফেলতে ফেলতে নর্ম আর ট্রেন্ড বানায় ফেলবে।
আমার ইয়াংগার ভার্সন ছিল ওই দ্বিতীয় রকম। আমার ক্ষেত্রে অবশ্য চাকরি ছিল চট্টগ্রাম, বন্ধু ও বান্ধবীরা থাকে ঢাকায়, বাসা ছিল নরসিংদী। আই উড টেক থার্টি লং জার্নি রাউটস বিফোর আই বো ডাউন টু মাই ফেইট। একই মেন্টালিটি আমাকে সবখানে বেশ সহায়তা করেছিল।
বয়স বাড়ছে। লড়াকু মানসিকতা দিন দিন কমে আসার কথা। ফুরিয়ে যাওয়ার কথা তেল। তবে গত দুই বছর জন্মদিন এলে আমি আমার ২০১৩-২০২০ সালের ফেইজটার কথা মনে করি। ওই সাত বছর আমার কাছে গেছে ৭ মাসে। অন্তত এমনই মনে হয়েছে। এখনো আমার মনে হয় আমার বয়স বিশ-একুশে আটকে আছে। কারণ আমার দিন পেরিয়েছে তিন দিনে, দশদিনে একদিন। পৃথিবী এগিয়ে গেছে।
আমাকে ফেলে পৃথিবী সামনে এগিয়ে গেছে। আমি আটকে আছি ওই নয়টি বছর আগে। পৃথিবীর কাছে পেরিয়ে গেছে ৯টি বছর।
আমার কাছে ২০১৩ এর পর পেরিয়েছে এক বছর + ২০২১, ২২। এখন আমি আছি ২০১৬তে।
যতদূর বুঝতে পারছি, রকেটবেগে আরও কয়েক দশক চলে যাবে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখবো আমার বয়স ৬৫। তারপর মরে যাবো।
কাজেই প্রতিবার আমি মনে করতে চাই ২০১৩ থেকে ২০২০ সালের আমাকে। দু’চারজন আমাকে চিনলে ওই আমাকেই চেনেন। আমি কোন ঝামেলায় পড়লে তার কাছে পরামর্শের জন্য যাবো। পিচকু একটা, কিন্তু মাল। আমার ওই সেলফটার প্রতি আমার বেশ শ্রদ্ধা আছে। অনুসরণীয়।
এখন আমি ঢোঁড়াসাপ। রোজ রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে ওঠা একটা প্রাণী। বাড়াগুলো হাতে হাতে লওয়ার হুমকিতে অবিচল যুবকটি নই।

 

২.
“One for creativity, One for your soul.”
আমার ফটোগ্রাফি মেন্টর পিটার ম্যাককিনন। তিনি ২০২০ সালের ২৭ই মার্চে একটা ভিডিয়ো আপলোড করলেন। ভিডিয়োর টাইটল ওয়ান ফর ক্রিয়েটিভিটি, ওয়ান ফর ইয়োর সৌল। ঘটনাটি কী?
ঘটনা হচ্ছে, প্যাশনকে প্রফেশন বানাতে হয়। এ মানবসমাজের একটা বাল-মার্কা নিয়ম। প্যাশনকে যখন টাকার হিসাবে মাপতে হয় তখন অনেক বাধ্যকতা চলে আসে। যেমন ইচ্ছে লেখার আর থাকে না আপনার কবিতার খাতা। কারণ দশ বছর ধরে ‘মাস্টারপিস’ লিখবেন, তো খাবেন কি? আপনাকে কি প্রকাশক প্রতি মাসে সত্তর বা আশি হাজার টাকা করে দেবে কারণ আপনি দশ বছর পর তাকে একটা বই দেবেন? দেবে না।
তখন আপনাকে এই ওই লিখতে হবে। নইলে মুন্ডু ঘ্যাচাং।
কাজেই, আমি কখনো লেখালেখিকে প্রফেশন বানাতে চাইনি। এখন যতখানি প্ল্যাটফর্ম আমি পাই তাতে করে বছরে দশ কিংবা বিশ লাখ টাকা কি লেখালেখি থেকে কামানো অসম্ভব? হয়তো না।
কিন্তু আমার সৃষ্টিশীলতাকে টুথপেস্টের মতো ট্রিট করতে আমি চাইনি কখনো। আমার যদি ইচ্ছে হয় এক বছরে দশটা ছ’শ পৃষ্ঠার উপন্যাস লিখবো। সে গতি ও কল্পনাশক্তি আমার আছে। আবার আমার যদি ইচ্ছে না হয়, আমি তিন বছরে একটা লাইনও লিখবো না। ফরমায়েশি কাজ আমি কখনো করি না। জবাবদিহিতাও করি না কাউকে লেখা নিয়ে।
কিন্তু সব সময় সব এড়ানো যায় না। জেন্টলমেন’স ওয়ার্ড নিয়েই আমি নানা রকম চাপে থাকি। আইনী কোন ঝামেলা নেই। ফাইনান্সিয়াল চাপেও নয়। স্রেফ কাউকে কথা দিলে তা রাখার চেষ্টা থেকে আমার যে পরিমাণ চাপ রাইটিং নিয়ে নিতে হয় – পিটার ম্যাককিননের ওই কথাটি আমার ক্ষেত্রেও কাজ করে।
ওয়ান ফর ক্রিয়েটিভিটি।
ওয়ান ফর মাই সৌল।
এই স্ট্যাটাস আমি লিখবো স্রেফ আমার নিজের জন্য।
এর বাইরে এ মুহূর্তে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে নিয়ে লেখা আমার উপন্যাস রান্না হচ্ছে।
২০০০টি শব্দ লিখলে ওটাই লেখা উচিত। লেখা আগাবে।
কিন্তু ওটা ফর ক্রিয়েটিভিটি।
দিস ওয়ান ইজ ফর মাই সৌল।

 

৩.
২০১৫ সালের দিকে আমার একটা রিয়ালাইজেশন হয়েছিল। এটাকে আমি বলে থাকি আমার “মুরগি-তত্ত্ব”। কেপি’স চিকেন হাইপোথিসিস।
১৪ সালের কথা বোধহয়। রাজশাহীতে থাকি তখন। বাসা থেকে ক্যাম্পাসের নর্দার্নের গেটে যাইতে পাঁচ টাকার অটোভাড়া। অটোতে বসে বসে যাচ্ছি। হঠাৎ দেখা গেল একটা মুরগি রাস্তা পার হচ্ছে।
অটো প্রবল বেগে চলছিলো। মুরগিটা তা দেখে আরও দ্রুত রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করলো। আমি কিংবা অটোচালক দুইজনই বুঝলাম এই অবস্থায় চললে মুরগিটা নিশ্চিতভাবেই অটোর তলে পড়ে মরবে।
অটোওয়ালা অটোর গতি এমন একটা হারে কমালেন যেন মুরগি অল্পের জন্য রক্ষা পায়। হলোও তাই। শেষ মুহূর্তে মুরগি কিছুটা দৌড়ে কিছুটা উড়ে কক-কক-ককস শব্দ করে রাস্তাটা পার হলো। ডানা-মানা ঝাপ্টিয়ে।
মুরগিটা ভাবলো, “ঠিক সময়ে দৌড় শুরু করেছিলাম বলেই বেঁচে গেলাম।”
সে জানলোও না তাকে বাঁচাতে অটোওয়ালা গতিও কমিয়েছিলো।
আমাদের জীবনে আমরা অনেক সময়ই মনে করি এমন করার কারণেই বাঁচলাম, তেমন করার কারণেই বাঁচলাম। আসলে হয়তো অন্য ফ্যাক্টর সেখানে কাজ করে।
আমি আমার জীবনের ওপর বাজি ধরে বলতে পারবো, যাদের যাদের আমি পরিষ্কারভাবে দেখতে পাই আমার যে কোন অর্জনের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান রেখেছেন –
তার বাইরে আরও অনেক অনেক অনেক মানুষ আসলে আমাদের ক্যারিয়ার, সাফল্য, প্রতিটি জয়ের পেছনে আছেন। মুরগির মতোই আমরা কেবল মনে করতে পারি বাবা-মাকে, ভাইয়া-ভাবীকে, বড় ভাইদের যারা ছায়া দিয়েছেন, ছোটভাইদের যারা নিজেদের সোগা পেতে দিয়ে আমাকে ওপরে ঠেলা দিয়েছেন, প্রতিবেশিদের, কলিগদের, শুভাকাঙ্খীদের, এমনকি হয়তো শত্রুদেরও!
অথচ এর বাইরে অসংখ্য মানুষ আছেন যাদের অনেকেই লাইফ অল্টারিং ভূমিকা রেখেছেন। জীবন চলার পথে আমরা ওই রাজশাহীর মুরগি বই তো নই, যা চোখে পড়লো – হার্ড ওয়ার্ক, অমুক তমুকের সংস্পর্শ, সহায়তা – এর বাইরে আরও অনেকের অবদান আমরা ভুলে যাই। ভুলবো কী – হয়তো জানিও না যে আছে। আমি যে কোন সুযোগ পেলেই তাদের প্রতি নীরবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি যাদের ব্যাপারে আমার এমনকি ধারণাও নেই অথচ তারা গতি কমিয়ে আমাকে রাস্তা পার হওয়ার সুযোগটি দিয়েছেন।

 

৪.
বেথ হারমনকে (কুইনস গ্যাম্বিটের ফিকশনাল ক্যারেকটার) তার মা একটি কথা বলেন। এই কথাটি আমার খুবই ভালো লেগেছিল। আমি এটা অনেক অল্প বয়স থেকেই অনুসরণ করি। তবে ওই সিরিজে দেখলাম কেউ তা প্রথমবারের মতো লিখে ফেললো!

“It Takes A Strong Woman To Stay By Herself In A World Where People Will Settle For Anything Just To Say They Have Something.”

ছেলেদের জন্যও তা অনেকাংশে প্রযোজ্য। ছেলেদের কত অল্প কারণে সেটল ডাউন হতে দেখলাম। জাস্ট টু সে দে হ্যাভ সামথিং। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে একটা সেলফি দেয়ার তৃপ্তি! ছেড়ে দিলো হয়তো মহাকালের হাতছানি। বেছে নিলো হারিয়ে যাওয়ার পথ। আমি এসব নিয়ে কিঞ্চিৎ জাজমেন্টাল ছিলাম। ভাবতাম আমরা মানুষ, আমরা ইভলভড, আমাদের উচিতই না ছোট কিছুর জন্য কিছু করা। সব সময় টার্গেট থাকবে লার্জার দ্যান লাইফ কাজ নিয়ে। এর বাইরে আর কিছুর গুরুত্ব থাকতে পারে না।
চন্দ্র যেমন সূর্যকে ঘিরে ঘুরে, তেমন মানুষ একটি প্রাণিবিশেষ হিসেবে ক্ষুধা, যৌনতাড়না, পরিবার গঠন কিংবা বংশবিস্তারের তাড়না অনুভব করে। যতই সুন্দর শব্দে একে সাজান না কেন, আমার কাছে মানববৃত্তীয় সহজাত – একেবারেই ব্যাসিক জিনিসপত্র সাহিত্য নয়। অবভিয়াস বাল এসব। আমি যদি চাঁদ কেন ও কীভাবে পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে তা নিয়ে ৫০০ পাতার রোমহর্ষক বই লিখি, পড়বেন? ঠিক এমনই নিরাসক্ত বোধ করতাম জরিনা কেন কাশেমকে পেল না জাতীয় ক্যাচক্যাচানিতে। যারা এই ব্যাটলেই নিজেকে আটকে ফেলেছেন তাদের করতাম কম-বেশি জাজ।
অতি-অদূর অতীতে আমার একটা রিয়ালাইজেশন হলো। আমরা অনেক কিছুই টেকেন ফর গ্র্যান্টেড ধরে নেই। সব সময় এ থেকে নিজেকে সতর্ক ও নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি আমি, তাও পারিনি। আটকে গেছি। যেমন মানুষকে সেটল হওয়ার জন্য অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে যেতে দেখে আমার জাজমেন্ট ছিল কিছুটা অন্যায়।
হঠাৎ করে আমি খেয়াল করলাম এক বাংলাদেশে আমার কমিউনিটির সংখ্যা ৯টি। যে কেউ বাংলাদেশে এলে তাদের ক্লোজ বন্ধু ও পরিবারের সংখ্যা হয় ৩০-৫০। এর বেশি মানুষের সাথে ‘দেখা করতেই হবে’ তাড়না তাদের থাকবে না। আমার ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি হবে ২৫০০ কিংবা তার বেশি। একটা কথা প্রচলিত আছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন বন্ধু গজানো কঠিন। আমার ক্ষেত্রে সেটি সঠিক নয়। কখনো এই সমস্যা আমার হবে না।
মরার আগতক আমার বন্ধুর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। মেকি মেকি বন্ধুত্ব না। সত্যিকারের গ্যাঞ্জামে পড়ে সত্যিকারের গ্যাঞ্জাম করে সত্যিকারের বন্ধুত্ব। এর পেছনে আছে আমার লেখকসত্তা।
না, রেপুটেশন নয়। প্রথম যখন টেক্সাসে পা রাখলাম, তখন আমাকে অন্তত টেক্সাসবাসী চিনতো না। তাদের মধ্যে দিনশেষে আমার নিখাদ বন্ধুত্ব যাদের সাথে হয়েছে তা “ও তুমি আমার ডিপার্টমেন্টের, চলো বিড়ি খাই” ধাঁচের নয়। সেই প্রাইমারি স্কুলের বন্ধুত্বই হয় আমার সাথে কারো সম্পর্ক কাছের হলে। আমরা আনসার্টেইনটির মধ্যে একটা ভেজাল করে ফেলি। সেই ভেজাল থেকে বের হতে হতে একটা বন্ডিং হয়। স্বার্থের উর্ধ্বে সম্পর্ক। এটা আমার ক্ষেত্রে হয় আমার লেখকসত্তার জন্য। স্টোরি খোঁজার মানসিকতা থেকে আমার পৃথিবীর তাবত জিনিসে আগ্রহ। কিছুতে না নেই। কাজেই আমার পছন্দসই পার্সোনালিটি ট্রেইট অনেক লম্বা রেঞ্জের। আপনি পাখিপ্রেমী হলেও আপনার সাথে বার্ড ওয়াচিং নিয়ে ৬ ঘণ্টা আড্ডা দেব। আপনি আন্ডারওয়ার্ল্ডের খুনী হলে আপনার সাথে ঢাকার অজানা ক্রাইম স্টোরি নিয়ে ৬ ঘণ্টা আড্ডা দেব। আপনি ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট বয় হলে আপনার সাথে দাঁতভাঙ্গা পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্ব নিয়ে ৬ ঘণ্টা আড্ডা দেব। আপনি মদখোর হলেও আপনার সাথে ৬ ঘণ্টা মদ খাবো। আপনি নামাজী হলে আপনার পাশে বসে ৬ ঘণ্টা জিকির করবো। কাজেই, নতুন নতুন সম্পর্ক বানাতে পারি আমি।
২৫ এর পর বা ৩০ এর পর মানুষ আর নতুন সম্পর্ক বানাতে পারে না (তুমি আমি এক ডিপার্টমেন্টে/শহরে/ব্যাচে? ইয়েস। বন্ধু। – এজাতীয় সম্পর্ক নয়। একসঙ্গে অ্যাডভেঞ্চার করার মতো সম্পর্ক। উল্লেখ্য, ট্যুর মারা কোন অ্যাডভেঞ্চার নয়।) বোধহয় নিজের দোষেও কিছুটা। ততদিনে বেশিরভাগ লোকই অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী। কাজেই তারা আর পছন্দের বাইরে কিছু করবে না। আর পছন্দের রেঞ্জ ছোট হতে হতে একেবারে কুয়োতে নেমে আসে তখন।
জিকির করা লোক মদখোর পছন্দ করে না। একগামী মানুষ বহুগামীদের পছন্দ করে না। চলিত ভাষায় কথা বলা লোক রাস্তার ভাষায় কথা বলা লোক পছন্দ করে না। পশ লোক গরিব লোক পছন্দ করে না – ইত্যাদি। ভালো লাগে না তাদের সঙ্গ আরকি। কাজেই যে ভয়টা থেকে তারা সেটল হয়ে যায় জীবনে তা একেবারে অমূলক তা বলা যাবে না। তার ভিত্তিপ্রস্তর বেশ গভীরেই প্রোথিত।
এই জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমি আমার এই ব্লেসিংটিকে অ্যাপ্রিশিয়েট করবো। এখানেও চলে আসবে মুরগি-তত্ত্ব। অনেক লেখকই একাকী মরেন। অন্তত আমার ক্ষেত্রে, অফলাইন ও বাস্তব জীবনে আমাকে কখনো একাকী থাকতে হবে না, মরতে হবে না একাকী – ইফ আই ওয়ান্ট নট টু।
হয়তো আমি নির্বাসনই পছন্দ করবো শেষটায়। তবে যখন আপনি নরক চুজ করতে পারেন, তা ঠিক আর শাস্তি হয় না।
এ বছর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রিয়ালাইজেশন এটাই।

 

৫.
গত দশ বছরের প্রায় পুরোটা গেছে চিন্তা করতে। আমি ভেবেছি, পড়েছি, দেখেছি মানুষ। লিখেছি মানুষ। আবিষ্কার করেছি অর্ধযুগ পর, ভয়ঙ্কর এক ম্যানিউপুলেটিভ শক্তি জন্ম নিয়েছে অজান্তেই। ভয় পেয়েছি মানুষ তারপর। সরেছি। নির্বাসন দিয়েছি নিজেকে বেশ কয়েকবার।
ফলাফল হিসেবে শুধু কথা বলার জন্য মানুষ মেরে ফেলতে চেয়েছে। হুমকি ভেবেছে। হয়তো এখনো ভাবে। কথা আমি অনেক কম বলি এখন। ইচ্ছেই করে না। গত কয়েক মাসে আমার খুব একটা ভিডিয়ো আপনারা দেখেননি। পোস্টও আগের মতো করি না। করলেও তা আমার চিন্তাভাবনা বা ফাইন্ডিংস নিয়ে নয়, যদিও তারা চলমান।
আমার সবচেয়ে পছন্দের টিভি সিরিজ কোনটি? ব্রেকিং ব্যাড নয়। ‘ফায়ারফ্লাই’। সব সময় #১। পক্ষপাতদুষ্ট কারণে।
ফায়ারফ্লাইয়ের গল্প যুদ্ধের পর থেকে শুরু। ক্যাপ্টেন ম্যাল ফায়ারফ্লাই মডেলের একটি স্পেসশিপ কিনেছেন, নাম রেখেছেন সেরেনিটি। একসময়ের ভেটেরান আজও স্বাধীনতাকামী। সরকারের বশ্যতা স্বীকার করার প্রশ্নই আসে না। কাজেই তাকে ও তার ক্রুকে লুটপাট করে পেট চালাতে হয়। এর মধ্যেই নতুন এক প্যাসেঞ্জার, সন্দেহজনক এক ভাই ও তার টিনেজার বোনকে নিজেদের শিপে তুলে নিয়ে কাহিনীটা শুরু হয়।
আরও একবার সেরেনিটি মুভিটা দেখলাম। ক্যাপ্টেন ম্যালের জীবনদর্শন এবং চরিত্র – নিজের সাথে এত বেশি মিল পাওয়া খুব বেশি চরিত্র অবশ্যই হলিউডে তেমন একটা পাইনি।
ম্যাল সম্পর্কে এক বাটপাড় জমজ চোরাকারবারী বলেছিলো, “You’re unpredictable, Mal. You run when you ought to fight. Fight when you ought to deal.”
ফায়ারফ্লাই এর থিম সং আমার সব সময়ের পছন্দের গান। দ্য ব্যালাড অফ সেরেনিটি।
Burn the land and boil the sea
You can’t take the sky from me
ক্যাপ্টেন ম্যালকমকে নিয়ে লেখা। সে একটা স্পেসশিপের কাউবয়। আউট ল’। তবে আত্মবিশ্বাসী। সে জানে, তাকে তাড়া করে স্পেসে পাঠিয়ে দিলে, কিংবা সমগ্র জমিনে আগুন ধরিয়ে দিয়েও ঠেকানো যাবে না। কারণ, তার আছে আকাশ। সে উড়বে।
ক্যাপ্টেন ম্যালকমকে নিয়ে ভিক্সি অ্যান্ড টনি পরে আরেকটি গান লিখেছে। এটাও আমার বেশ প্রিয়।
I’ve been hounded, hated, married and tricked
I’ve been tortured, cheated, shot and tied
You won’t see no tears when I say goodbye
I’ve still got my family and my Firefly
নতুন একটা বছর আসছে। সেই সাথে পৃথিবীতে আরও একটি বছর কাটিয়ে ফেললাম। সব সময় নতুন বছর শুরু করতে চাই এই একই স্পিরিট নিয়ে।
লড়বো।
হারলে হারবো।
ফলাফল দেখে খেলাধূলোর অভ্যাসটি এই বয়সেও হলো না।
১% উইনিং প্রোবাবিলিটি থাকলেও আমার কাছে তা ওর্থহোয়াইল একটা ব্যাটল।
এই মনস্তত্ত্ব নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা।
সেটি আগামি এক ঘণ্টাও হতে পারে। আগামী চার দশকও হতে পারে।
দীর্ঘ জীবন নিয়ে আমার বাড়াবাড়ি পিনিক নেই।
যদি আমাকে আপনি জানিয়ে দেন এক ঘণ্টা পর আমাকে মরতে হবে – আমি হয়তো চেষ্টা করবো আরেকটা চ্যাপ্টার লিখে যাওয়ার – “ক্র্যাকস অফ সেভেন্টিওয়ান” উপন্যাসের।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা সবাইকে, যারা “ওয়ান ফর মাই সৌল” পড়তে পড়তে তলা পর্যন্ত এসেছেন।

প্রচুর শুভেচ্ছা পেয়েছি জন্মদিনের। বিশেষ করে রিভিউগুলো দেখে মন গলে গেছে। উত্তর দেব পরে। সবাইকে ধন্যবাদ।

 

ডিসেম্বর ৩১, ২০২২

কেপিমত নন-ফিকশন

Post navigation

Previous post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

অধ্যায় ০২. ০১ ⌛ বি আ রিজনেবল ম্যান

Posted on July 7, 2021July 7, 2022

রিজনেবল ম্যান, আল্লাহর অবাধ্য নয়। বরং সবকিছু ঠিক থাকলে সে সৃষ্টিকর্তার বেস্ট অফ ইন্টারেস্টই চিন্তা করে দেখতে পায়, অনুভব করতে পারে, তার হয়ে কাজ করে।

Read More

আইরিশ ‘সাইকিক’ ও ভূতেদের দর্শন

Posted on February 5, 2023

টেক্সাস এমনই আনপ্রেডিক্টেবল। এই ফেব্রুয়ারি এসে এমন শীত আমরা কেউ আশা করিনি।

Read More

অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Posted on February 5, 2024

বুদ্ধিজীবি সময় বদলে দেয় না কখনো। সঠিক সময় বুদ্ধিজীবিদের একটা স্থান দেয়। একাত্তরে বর্তমানের বুদ্ধিজীবিরা থাকলে তারা নতুন একটি দেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখতেন। ২০২৩ সালে তারা হয়তো রপ্তানিযোগ্য ছাত্র তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন। এতে করে তাদের মেরিট নেই হয়ে যাচ্ছে না।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

009435
Total Users : 9435
Total views : 23711
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes