Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

গুডবাই

Posted on November 30, 2013June 15, 2022

স্নিগ্ধার হাত ধরে কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকল রিয়াদ।
আজ রিয়াদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুর বড়ভাইয়ের বিয়ে। চারপাশ নানারকম আলোয় ঝলমলে। দূর থেকেই ওদের দেখে ফেলল বন্ধু রাশেদ। এগিয়ে এসে উষ্ণ সম্ভাষণ জানাল সে।
‘কিরে! ভাইয়া তো ঝুলে গেল।’ স্বভাবসুলভ হাসিখুশি মুখ নিয়ে বলল রাশেদ। ‘তোরা ঝুলবি কবে?’
লজ্জিত হাসি দেয় স্নিগ্ধা।
‘সামনের বছর, যদি আল্লাহ সব কিছু ঠিক রাখে, দোস্ত।’ একটু হেসে বলে রিয়াদ। ‘চল, ভাইয়ার সাথে একটু টোকাটুকি করে আসি।’
হঠাৎ-ই হাসিটা ম্লান হয়ে যায় রিয়াদের মুখ থেকে।
ওটা তৃণা না? আরেকটা ছেলের হাত জড়িয়ে থাকতে দেখে ঈষৎ ঈর্ষার খোঁচা অনুভব করে ও বুকের ভেতর। তার থেকেও বেশি জ্বলে ওর ছেলেটার চেহারা দেখে। এই ব্যাটা দেখি একেবারে টম ক্রুজের বাংলাদেশি ভার্সন! রাশেদদের দিকেই এগিয়ে আসছে ওরা।
‘হেই রাশেদ!’ কাছাকাছি এসে ডাক দেয় ছেলেটা। ‘তরুণ ভাই আটকে গেছে। ভার্সিটিতে গ্যাঞ্জাম লেগে গেছে ওদের।’
‘ড্যাম!’ ঘুরে দাঁড়ায় রাশেদ। ‘যে করেই হোক বেরিয়ে চলে আসতে বল। দাঁড়াও আমিই ফোন দিচ্ছি।’
‘উঁহু – ভার্সিটিতে ভয়ানক আন্দোলন চলছে। ভিসি অপসারণের দাবী উঠে গেছে নাকি। আর এসব ক্ষেত্রে কাহিনী বুঝো না? ভায়োলেন্ট হয়ে উঠেছে পরিবেশ। ছাত্র কল্যান উপদেষ্টা হিসেবে উনি পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন। উনার ঘন্টা দুই দেরী হতে পারে। সিচুয়েশনটা একটু কুল ডাউন হলেই -’
‘কি আর করা।’ মন খারাপ করে বলে রাশেদ। তরুণ ভাই কাজিনদের মধ্যে সবচেয়ে বড় – জানে রিয়াদ।
হঠাৎ মনে পরে যাওয়ায় বিব্রত হয় রাশেদ। ‘এই যাহ – পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় নি তোদের।’ রিয়াদদের বলে ও, ‘কাজিন রেজা এবং হবু ভাবী তৃণা। রেজাকে চিনছ তো? আরঅ্যান্ডটি গ্রুপ অফ ইন্ড্রাষ্ট্রিজটা ওরই।’
‘হবু ভাবী?’ কখন যে জোরে উচ্চারণ করে ফেলে রিয়াদ – নিজেই খেয়াল করে না।
‘বাগদত্তা।’ ছাগলের-মত-প্রশ্ন-করিস-কেন টাইপ লুক দেয় রাশেদ।
একটানে পাঁচ বছর অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় রিয়াদকে কিছু স্মৃতি।
*
তৃণাকে প্রথম দেখেছিল ইউনিভার্সিটির ফ্রেশারস ওয়েলকাম পার্টিতে। অসাধারণ সৌন্দর্য আর মার্জিত একটা উপস্থাপনা – এই দুটো চুম্বকেরর মতো আকর্ষণ করেছিল ওকে। ইলেক্ট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী তৃণা। রিয়াদ কম্পিউটার সায়েন্সে।
দূরত্বটা কমিয়ে ফেলার পেছনে ভার্সিটির সবাই কৃতিত্ব দিবে রিয়াদকে। রিয়াদের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার কাহিনী ভার্সিটির সব ব্যাচের স্টুডেন্টের কাছেই স্বীকৃত ছিল। অবশেষে দেবীর দয়া হল। আগস্টের আঠার তারিখ তৃণা সম্মতি জানায় ‘পূজো গ্রহণের’।
রিয়াদের জন্য পরের সাড়ে তিনটি বছর ছিল স্বর্গবাসের অভিজ্ঞতা। একসাথে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া, ছুটির দিনগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরে বেড়ানো, সন্ধ্যারাতে ছাদে উঠে গালে গাল ঠেকিয়ে চাঁদ দেখা আর মাসে একবার করে নৌকা ভ্রমণ। মাসে দুই একবার ট্যুরের সাথে রাত্রিযাপন। পরীক্ষার আগে একজন আরেকজনকে গাইড দেওয়া – কমন কোর্সগুলোর ক্ষেত্রে গ্রুপ স্টাডি – মানে কি একাডেমিক, কি পার্সোনাল – রিয়াদের জীবন তৃণাময় ছিল।
কিছুটা সমস্যা যে ছিল না তাও নয় – প্রথম একটা বছর আবেগে অন্ধ হয়ে ছিল, এরপর ভবিষ্যৎ ভেবে মাঝে মাঝেই চিন্তিত না হয়ে পারত না রিয়াদ।
রিয়াদের বাবা একজন শিল্পপতি। সমাজের উচ্চস্তরের লোকজনের সাথে তাঁর উঠাবসা। অপরদিকে তৃণার বাবা সামান্য একজন স্কুলশিক্ষক। ন্যায়-নীতি, মান-মর্যাদার কথা বিবেচনা করে সমাজ তাঁকে অনেক ওপরে স্থান দিতে পারে – কিন্তু নিজের বাবাকে চেনে রিয়াদ। তাঁর পুত্রবধূর পরিচয় দিতে তিনি ‘স্কুলশিক্ষকের’ মেয়ের প্রসঙ্গ কোনদিনই মেনে নেবেন না। স্ট্যাটাস মেইনটেইন করে চলেন তিনি। সমাজের মানদন্ড তাঁর কাছে অর্থ এবং শিক্ষা উভয়ই। পাল্লার দিকে অর্থই হয়ত একটু বেশি ভারী। আত্মীয়তা করার আগে অবশ্যই তিনি ক্লাস এবং স্ট্যাটাসের দিকে নজর দেবেন। তৃণার বাবা যেই মানদন্ডে কোনভাবেই রিয়াদের বাবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে না।
তারপরেও দিন তো চলে যাচ্ছিল! যতদিনে না থার্ড ইয়ার সেকেন্ড সেমিস্টারে উঠে ইন্টার-ইউনিভার্সিটি কম্পিটিশনে অংশ নেয় রিয়াদের গ্রুপ। কম্পিটিশনে রিয়াদদের প্রজেক্টই ফার্স্ট হয় – তবে রিয়াদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় কম্পিটিশনটা। রানার্স আপ গ্রুপের লিডারের দিকে চোখ আটকে যায় রিয়াদের। মেয়েটার কথা বলার মধ্যে আধুনিকতার একটা ছাপ ছিল যেটা তৃণার মাঝে কখনও পায়নি ও। পরিচিত হতে দেরী করে না রিয়াদ। মেয়েটার নাম স্নিগ্ধা ; দেশের প্রথম সারির প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী।
ওখান থেকেই শুরু হয় ওদের বন্ধুত্ব। তৃণার জন্য সময় কমে আসতে থাকে রিয়াদের। স্নিগ্ধাকে তৃণার ব্যাপারে কখনো কিছু জানায় নি রিয়াদ। তাছাড়া স্নিগ্ধার বাবার অবস্থান রিয়াদের বাবার থেকেও একধাপ ওপরে কি না!
একদিন ফোনে তিক্ততার চরমে পৌঁছে যায় রিয়াদ-তৃণার সম্পর্ক। তখন রিয়াদ-স্নিগ্ধা হাতিরঝিলে। স্নিগ্ধা থেকে একটু সরে এসে রিসিভ করে রিয়াদ।
‘হ্যালো! রিয়াদ তুমি পাইছোটা কি বল তো?’ আহত বাঘিনীর মত হুংকার দেয় তৃণা।
‘কি হয়েছে? চিল্লাচ্ছ কেন?’
‘তোমার আজ বিকালে আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল না?’
‘ও হ্যাঁ, হঠাৎ নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ পড়ে গেল তাই আসতে পারিনি।’
‘আমাকে দুধের শিশু পাইছ? তুমি ক্যাম্পাস থেকে ওই ডাইনিটার সাথে বের হয়েছ – কি ভেবেছ কিছুই খোঁজ খবর রাখি না আমি??’
‘মুখ সামলে কথা বল।’ ওর বলার ভঙ্গিটা শুনে মেজাজ চড়ে গেল রিয়াদের।
‘আমার সাথে তুমি এভাবে কথা বলছ একটা প্রস্টিটিউটের জন্য? ওর জামাকাপড়ের অবস্থা দেখছ?’
‘শাট আপ!’ চোখ জ্বলে ওঠে রিয়াদের, চিবিয়ে চিবিয়ে তৃণাকে বলে ও, ‘শা-ট আ-প! একটা ভদ্রঘরের মেয়ের ব্যাপারে এভাবে কথা বলা তোমার মত মেয়ের মুখে সাজে না। ইটস ওভার, তৃণা। আর কোনদিন আমার সাথে কন্ট্যাক্ট করার চেষ্টা করবে না। ইউর রিয়াদ ইজ ডেড!’ কচ করে লাইনটা কেটে দিয়ে স্নিগ্ধার কাছে ফিরে আসে ও।
‘সরি – নতুন প্রজেক্টের ব্যাপারে ফোন দিয়েছিল ফ্রেন্ড।’ বিনীত একটা হাসি দিয়ে বলে রিয়াদ।
নিজের ইগো ছুঁড়ে ফেলে তৃণা বার বার ক্ষমা চায় রিয়াদের কাছে। স্নিগ্ধার ব্যাপারে করা মন্তব্যের জন্য স্নিগ্ধার কাছে ক্ষমা চাইতেও তার আপত্তি নেই, কাজটা যে ভুল করেছে তা ততক্ষণে সে বুঝতে পেরেছে। তবে রিয়াদকে শতবার জানালেও কান দেয় না ও। ততদিনে রিয়াদ – স্নিগ্ধার সম্পর্ক আরও এগিয়েছে।
অসহায় মেয়েটা সবই বুঝতে পারে। তিলে তিলে রিয়াদকে হারানোর ধাক্কা সে নিতে পারেনি। এক রাতে এক পাতা স্লিপ পীল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল, তথৈবচ। ওর দেহ অতিরিক্ত বিষক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে, পেছনে অবশ্য আছে বর্তমান সময়ের ফার্মাসিউটিক্যাল পলেসি। তবুও মেডিকেলে রাখা হয় তৃণাকে দু’দিন, পর্যবেক্ষণের জন্য। রিয়াদ কিছুই জানতে পারে না। যে রাতে আত্মহত্যার পথই তৃণার কাছে স্বর্গীয় লেগেছিল সে রাতেই রিয়াদ প্রপোজ করছিল স্নিগ্ধাকে। রিলেশনের এক বছরের মধ্যেই বাবাকে তাদের সম্পর্কের কথা জানাতে দ্বিধা করতে হয়নি রিয়াদকে – যে স্থান তৃণা সাড়ে তিনটি বছরেও পায়নি।
দিন – মাস – করে বছরও পেরিয়ে যায় দুইটি। তৃণার স্মৃতি স্নিগ্ধার আড়ালে হারিয়ে যায় পুরোপুরি।
*
আজ আবার তৃণাকে সামনে দেখে সব কিছু ওলোট-পালোট হয়ে গেল রিয়াদের। এই কয় বছরে মেয়েটা আরও সুন্দর হয়েছে। স্নিগ্ধাও যথেষ্ট সুন্দরী – কিন্তু আধুনিক পোশাক ছাড়া স্নিগ্ধার সৌন্দর্য্য ম্লান হয়ে যায় – লক্ষ্য করেছে রিয়াদ।
অথচ তৃণার দিক থেকে বেচারার চোখ সরাতে রীতিমত কষ্ট হচ্ছে। বাঙ্গালী মেয়ের মত শাড়ি পরে আজ এখানে এসেছে তৃণা – তাতে যেন ওর রূপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। আর ঘুরছে কার সাথে দেখো! আরঅ্যান্ডটির মালিকের সাথে – সবচেয়ে অল্পবয়সী ধনীদের একজন যে বাংলাদেশে। যে তৃণাকে স্ট্যাটাসের দোহাই দিয়ে একদিন দূরে ঠেলে দিয়েছিল সে এখন তার থেকে দেখতে এবং বিত্তে কয়েকগুণ ওপরের স্তরের ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে – দৃশ্যটা অসহ্যকর লাগল ওর। একটা টেবিল জুড়ে বসে রাশেদ, তৃণা , রিয়াদ আর স্নিগ্ধা। রেজা তখন পরিচিত এক বন্ধুর সাথে কথা বলতে উঠে গেছে।
কথা যা বলার ওরা তিনজনই বলছে। রিয়াদ হয়ে গেছে পাথরের মূর্তি।
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না।
‘আমি-ই ওকে ডাম্প করেছিলাম। দ্যাট ওয়াজ মি!’ নিজেই নিজেকে বোঝায় ও। কিন্তু কাজ হল না। বুকের যন্ত্রণাটা কমার বদলে বাড়লো।
‘স্নিগ্ধা ভাবীকে তো আপুর সাথে পরিচয় করানোই হল না!’ হঠাৎ মনে পড়ে রাশেদের। ‘তোরা কথা বল। আমরা আপুর সাথে কথা বলে আসি।’
তৃণা আর রিয়াদ একা এখন। দীর্ঘ দুই বছর পরে।
‘কেমন আছ তুমি?’ প্রশ্ন করে রিয়াদ।
‘ভালো।’ এতটুকুতে যেন প্রকাশ করতে পারে না তৃণা, ‘জীবনের সবচেয়ে ভালো সময় পার করছি। রেজার মত লাভিং একটা হাজব্যান্ড থেকে বড় চাওয়া একটা মেয়ের আর কি হতে পারে। ওকে দেখে গোমড়া মুখো মনে হচ্ছে না? আসলে কিন্তু তা না। ভীষণ মজার মানুষ।’ মুক্তোর মত দাঁত বের করে হাসে তৃণা। সুখী মানুষের হাসি। হঠাৎ লজ্জা পায়, ‘দেখেছ – নিজের কথাই বলে যাচ্ছি! তোমার কি খবর। শুনলাম তোমাদের নাকি সামনের বছর বিয়ে? তোমাদের দেখলেই এত হ্যাপী মনে হয় – জানো? ’
ঠিক আধঘন্টা পর স্নিগ্ধাকে নিয়ে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠে রিয়াদ। রাশেদের সাথে যথেষ্ট খারাপ ব্যাবহারও করে। যথেষ্ট হয়েছে ওর জন্য। পাশের সীটে বসে থাকা স্নিগ্ধাকে রীতিমত বিরক্ত লাগছে এখন ওর।
তার ওপর কালকে আঠারোই আগস্ট। এত থাকতে আজই এমন এক সন্ধ্যা গেল!
আজকের চাঁদটা সুন্দর। আকাশেও মেঘ নেই।
গাড়ির জানালা দিয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বিড় বিড় করে রিয়াদ – ‘হ্যাপী অ্যানিভার্সারি, তৃণা।’
*
বিয়েবাড়ির ভেতরে একা বসে থাকে তৃণা। বিষন্ন মুখ। রেজা এসে মুখোমুখি বসে। বুলেটের মত প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় –
‘তাহলে এই ছেলের সাথেই প্রেম করতি তুই ইউনিভার্সিটি লাইফে?’
‘হুঁ।’
‘এই শালা তো টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না। তোর কপাল ভালো। আপদ বিদায় হয়েছে, ভালো হয়েছে – এটাই বলব আমি।’
রাশেদ এসে যোগ দেয়।
‘অসাধারণ অভিনয়, ইমরান ভাই!!’ পিঠ চাপড়ে দেয় রেজা ওরফে ইমরানের।
প্রাণ খুলে হাসে ইমরান, ‘আরঅ্যান্ডটি এর মালিক, মানে- আসল রেজার সাথে গবেটটার দেখা না হলেই হয়।’
হাসিতে যোগ দেয় তৃণা আর রাশেদও। রাশেদের সাথে হাত মেলায় তৃণা। এখানে ওর কাজ শেষ।
‘থ্যাংকস এ লট রাশেদ ভাই। থ্যাংকস এ লট।’
তৃণাকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলে রিয়াদ যখন স্নিগ্ধার হাত ধরে দৃশ্যপট থেকে উধাও হয়ে গেছে – তৃণা ছয়টি মাস আচ্ছন্নের মত পার করেছিল। সারাটা দিন ঘরের মধ্যে নিজেকে বন্দী করে রাখা, ফ্যান, ফিতে, কিংবা মেডিসিন কেবিনেট দেখলেই জীবনটা শেষ করে দেয়ার এক তীব্র তাড়না অনুভব করা! অবশেষে প্রথম ধাপটা পেরুলো, আত্মহননের ইচ্ছেটাও ধীরে ধীরে কমে এলো। তার বদলে জায়গা করে নিলো প্রতিশোধের সুতীব্র বাসনা। পার্থিব মর্যাদার দোহাই দিয়ে ওকে ছুঁড়ে ফেলতে পারে যেই ছেলে – তাকে সে দেখিয়ে দেবে তার থেকেও বেশি মর্যাদার কাওকে পেতে পারে ও।
রিয়াদের ইউনিভার্সিটি লাইফের বন্ধু রাশেদ কোনদিনই রিয়াদের আচরণকে ন্যায় বলে মানতে পারেনি। কাজেই এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা দেয় রাশেদ। খালাত ভাই ইমরানকে রেজার ভূমিকায় অভিনয় করার কথা বলতেই সানন্দে রাজি হয়ে যান ইমরান। বোনকে এবং পরিবারকে অসম্মান করে পার পেয়ে যাওয়া ছেলেটার বিরুদ্ধে কাজ করে পাওয়া আনন্দটাকে উপরি হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি।
চাঁদের দিকে তাকায় তৃণা।
আজকের চাঁদটা সুন্দর। আকাশেও মেঘ নেই।
বিড় বিড় করে বলে ও, ‘গুডবাই, রিয়াদ।’

রচনাকাল – ৩০শে নভেম্বর, ২০১৩

রোমান্টিক

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ

Posted on November 27, 2013June 15, 2022

সুন্দরী একটা মেয়ের কান্না দেখার চেয়ে বাজে জিনিস আর কিছু হতে পারে না। তাছাড়া একজন পুরুষের পক্ষে এমন এক মেয়ে উপেক্ষা করাও শক্ত এক কাজ।

Read More

গোয়েন্দাগিরি 

Posted on December 29, 2013June 20, 2022

নিজের রোলটা পার হয় যেতেই আবারও ঝুঁকে পড়ে তাহমিদ কাগজটার ওপর। হাতে আতশী কাচ। পাশের সারি থেকে ওদের ভাব ভঙ্গী দেখে মুচকি হাসে প্রিয়াংকা আর কেয়া।

Read More

চুইংগাম

Posted on December 7, 2013June 15, 2022

ছেলেটা বুঝে গেলেই তো শেষ। ছেলে জাতিটাকে চেনা আছে। বুঝিয়ে দাও তুমি দুর্বল – তোমার প্রতি আগ্রহ হাওয়া হয়ে যাবে সাথে সাথে। ভাব ধরে থাকতে হয়।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

009435
Total Users : 9435
Total views : 23711
Who's Online : 1
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes