Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

Chapter I. HATRED | Evolution from Hate to Acceptance of Israel

Posted on October 11, 2023

অধ্যায় ০১ ঘৃণা

বয়স তখন খুব অল্প। একজন কাশ্মিরের কিশোরের জীবনের ওপর ভিত্তি করে লেখা গল্প পড়লাম। পড়ে আমার গায়ের ভেতর জেহাদের লহু টগবগ করে বইতে থাকলো। খুব ইনিয়ে-বিনিয়ে লেখা হয়েছিল কীভাবে অমুসলিমরা মুসলমানদের মেরে ফেলেছে। কিশোরের পরিবারের সবাইকে খুন করে ফেলেছিল তারা। এদিকে কিশোর তখন প্রতিশোধের জন্য ক্ষেপে আছে। সে যুদ্ধ করবে। এবং খুব সম্ভবতঃ মারেও কিছু ভারতীয় সেনাকে। খুব গর্বের বিষয় হিসেবে দেখানো হয় সেই হত্যাকাণ্ড, এই কারণে নয় যে বাংলাদেশ আক্রান্ত। বরং বাংলাদেশে ঐ ১৯৯৯-২০০০ সালে এসব লেখালেখি খুব খোলামেলাভাবে চলতো। ভারতের সেনা মারা পুণ্যের কাজ ইসলামী কারণে – এমন একটি ন্যারেটিভ দাঁড়া করানো ছিলই। বিডিআর যখন কোন সীমান্ত সঙ্ঘাতে বিএসএফকে ঢিঁট করে দিতো, জনপদে একটা চাপা উল্লাস দেখা যেত। এই কারণে নয় যে বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করছে। বরং এ কারণে – ভারতকে ইসলামের দুশমন হিসেবে একটা সলিড ব্যাকগ্রাউন্ড দেয়া হয়েছিল।

এরপর মাসুদ রানার একটা বইতে পড়লাম সে তেল আবিবে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। একজন ইজরায়েলি সৈন্য তার খোঁজ নিতে আসে। এবং আরেকজন গার্ডকে প্রশ্ন করে বন্দি মুসলমান কি না। সে ইতিবাচক উত্তর দিলে সৈন্যটি মাসুদ রানাকে পিটিয়ে আধমরা করে তার মুখে থুতু ফেলে বলে, “আই হেইট মু(লিমস।” বিষয়টি চিন্তা করে আমার মাথায় আগুন ধরে যায়। ইজরায়েলের লোকজন এত খারাপ তা আমার জানা ছিল না। আমার মনে হলো, আমিও তো একজন মুসলমান। তাহলে আমাকেও কি ওরা এভাবে মারবে? স্রেফ আমি মুসলমান বলে? ব্যাপারটি আমার কাছে কোনভাবেই ন্যায় মনে হলো না। এরকম খারাপ মানুষরা পৃথিবীতে কী করছে তা ভেবে পেলাম না।

এরপর আরেকটা গল্প পড়েছিলাম যেখানে বলা হয়েছে ফিলিস্তিনের ওপর ইজরায়েল কী ভীষণ অত্যাচার করছে। বোমা মারছে। বাচ্চা মরছে। ইত্যাদি। ইজরায়েলের প্রতি একটা যুগপৎ ঘৃণা সৃষ্টি হলো। মনে হলো, ক্ষমতা থাকলে আমি একদিন ইজরায়েলে গিয়ে এই জালেমদের শেষ করে ফেলবো। কুকুর মনে করতাম। আর ধর্মমতে কুকুরকে খুব জঘন্য প্রাণী মনে করার ব্যাপার ছিল। কুকুর নাপাক। কুকুর একটি খারাপ প্রাণি – এটিই ছিল আমার ধর্মের শিক্ষা। মনে হলো ইজরায়েলিরাও নাপাক। তারাও খারাপ প্রাণি। তারা তো কুকুরই হবে।

আমার মনে হয় আর যে কোন মুসলিম দেশে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা শিশুর মনে একই রকম চিন্তাধারা দোলা দিয়েছে। প্রচণ্ড ঘৃণা নিয়ে বড় হওয়ার পেছনে আমাদের স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে কিংবা এহেন আর সব বইতে আমি পড়েছি ইহুদিদের সাথে বন্ধুত্ব নয়। তারা মুসলমানদের শত্রু।

এর পাশাপাশি মনে পরে ধারাবাহিকভাবে পড়েছিলাম ‘ষড়যন্ত্রের কবলে ইসলামি দুর্গ’, খুব সম্ভবতঃ আলতামাশের লেখা, মানে যিনি সম্ভবতঃ সাইমুম সিরিজ লিখেছেন। তো পড়ে আমার মাথামুথা তো চুদে গেল। খ্রিস্টান আর ইহুদিদের আস্পর্ধা দেখে মেজাজটাই খাপ্পা হয়ে গেল আমার। এরা তো মহা বদমাশ! সালাউদ্দিন আইয়ুবি আমার কাছে তখন বিশাল হিরো। তখনও আমার বয়স দশ বছর হয়নি। বয়সের হিসাব করছি কোন বাড়িতে কোন জিনিস পড়েছি সে হিসেবে। যে বাসায় এই বইগুলো আমি পড়তাম সেখানে এসেছিলাম যখন আমার বয়স সাড়ে ছয়। এরপরের ঘটনা আরকি। ওই বাসাতেই ‘আদর্শ নারী’ পত্রিকা আমি বেশি পড়েছি। সাধারণতঃ বাসায় ‘আদর্শ নারী’ ম্যাগাজিনটি দিতে এলে আমি-ই তা রিসিভ করতাম। মূল্য ছিল দশ টাকা। যতদূর মনে পড়ে এর আগের বাসায়, অর্থাৎ জিয়া সারকারখানা হাউজিংয়ের সি-৪-এমেও আমি আদর্শনারী দেখেছি, পড়েছি। মানে চার-পাঁচ বছর বয়সের চিন্তা এসব।

সচরাচর বাচ্চারা এই বয়সে যা শেখে, যা শুদ্ধ বলে জানে – তা বাকি জীবন বয়ে বেড়ায়। আজকে ফেসবুকের কমেন্টবক্সে যেসব যোদ্ধা ও বোদ্ধাদের দেখা যায় তারাও ঐ বয়সেই জেনেছেন ইজরায়েল খারাপ, খুবই খারাপ। ইহুদি আর খ্রিস্টানরা সব সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিন লাদেন একজন বিশাল হিরো। তারা হবে তালেবান, বাংলা হবে আফগান। টুইন টাওয়ার হামলা যখন হলো তখন আমি দুধের শিশু। অতটুকু বয়সের বাচ্চার খুব বেশি ন্যারেটিভ জানার কথা নয়। অথচ বইপত্র পড়ার কল্যাণে আমার মনে হলো, এ একটা বীরোচিত জবাব মুসলমানরা দিয়েছে। লাদেন রাতারাতি হিরো হয়ে গেল এলাকায়। ঈদের সময় ছোট পটকাগুলোকে বিক্রি করা হতো ‘লাদেন বোমা’ বলে। কারণ বাংলাদেশে অনেক পরিবারের কাছেই তখন লাদেন একজন বিশাল হিরো।

আমি বইপত্র পড়ে যতদূর বুঝেছি, ইহুদি আর খ্রিস্টানরা আমাদের ক্ষতি করেছে অনেক। প্রচুর মুসলমান মেরেছে তারা। কাজেই তাদের যে কোন উপায়ে ঢিঁট করাটি ঠিক আছে – এটাই আমার বুদ্ধির দৌড়। পাঁচ-ছয় বছরের একটা বাচ্চার চোখে বিষয়টা তার পড়া বইপত্র থেকে এমন হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। সেটিকে আমি খুব কড়াকড়িভাবে বিচার করি না। কিন্তু লজ্জা পেয়ে যাই যখন দেখি পঁচিশ-ত্রিশ বছরের দামড়া যুবকও ঐ পাঁচ বছরের বাচ্চাটির ন্যারেটিভ নিয়ে চলাফেরা করছে। তাকে আমি বোঝাবো কী? তার থেকে আমি বোধহয় বোধগম্যতার দিক থেকে পঞ্চাশ বছর এগিয়ে আছি। চট করে তাকে কিছু বললেই যে তার মাথায় ঢুকবে এমন নয়।

ঐ বয়সে আমার কিছু যুক্তি ছিল। পাঁচ থেকে পনেরো বছর পর্যন্ত আমি এসব যুক্তি ধীরে ধীরে পেয়েছি, দাঁড় করিয়েছি। ক্লাস নাইনে থাকতে তা ব্যবহার করে নাস্তিকদের সাথে নিয়মিত তর্ক করি। নাস্তিকরা লা-জওয়াব হয়ে যায়। বিবর্তনের একটা কুরআনিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বের করে নাস্তিকদের আসরে প্রশ্ন করলাম। মডারেটর আমার কমেন্টই ডিলেট করে দিলেন। আমার মেজাজ খাপ্পা হয়ে গেল। জবাব না থাকলে ওভাবেই মুখ লুকিয়ে চলে যায় মূর্খের দল – বন্ধুদের বললাম।

আজ আমি জানি কত বড় স্টুপিড ছিলাম আমি। ইডিয়টের মতো কথা বলেছিলাম। তবে তের-চৌদ্দ বছরের ছেলেরা স্টুপিডের মত কথা বলতেই পারে। আমার মাথা হেঁট হয়ে যায় যখন দেখি ফুলি-গ্রৌন মানুষ তেমন কথা বলছে। অর্থাৎ এদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি আর তেমন হয়নি। আমার আর্লি টিনেজ বয়সে যেমন মূর্খতা ছিল, ইনাদের এই বুড়ো বয়সেও সেই একই মূর্খ অবস্থান।

তবে একই কারণে আমি কাউকে ব্লক করি না সহজে। কারণ এই যে তর্ক করতে আসছে, ঘৃণা করছে, এটাই প্রসেস। এভাবে তারা তর্ক করবে, যেভাবে আমি করেছিলাম। তারপর তারা বুঝতে পারবে, দেখতে পাবে সত্যটা।

সত্যটা আমি আবিষ্কার করলাম ইন্টারনেট আসার পর। ধীরে ধীরে আমার সামনে জগত উন্মোচিত হচ্ছিল। ভিয়েতনামী একটা মেয়ের সাথে খুব ভাব হয়েছিল আমার। ওকে আমি একটি নাম দিয়েছিলাম। আজ, দু’হাজার তেইশ সালে, প্রায় পনের বছর পরও ও তার ফেসবুকে সেই নামটিই ব্যবহার করে। বন্ধুদের সেই নাম বলেই পরিচয় দেয়। ওর সাথে আমার তখন নিয়মিত কথা হতো। আমরা দু’জনই এমা ওয়াটসনের দারুণ ভক্ত ছিলাম। পরিচয়টা হয়েছিল এমা ওয়াটসন ডট নেট নামক একটি ওয়েবসাইট থেকে। সেখানে তখন চ্যাট করার ব্যবস্থা ছিল। অ্যাডমিনের নাম ছিক ডুক। ইউজারনেম ডুক_ডুক। এই প্ল্যাটফর্মে নানা দেশি বন্ধুদের সাথে আমার পরিচয় হতে থাকে।

ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারলাম, যে পৃথিবী আর যে সত্য আমাকে ছোটবেলার ইসলামী বইপত্র শিখিয়েছে, বড় বড় দাড়িওয়ালা আলেম-ওলামা বুঝিয়েছে – সব ভুল। সব ভ্রান্ত। সবই মিথ্যে মায়াকান্না। সত্যের লেশমাত্র নেই অধিকাংশ বক্তব্যে। যতখানি আছে, তাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এরা বানিয়েছে প্রায়-মিথ্যে। ঠিক যেভাবে শিশুহত্যার ধুন তোলা হয় আজকের দিনে এবং ন্যারেটিভটি বদলাতে বদলাতে এতই বদলে ফেলা হয় যেন ইজরায়েলকে দানব ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।

তখনও আমার বইপত্র পড়া অব্যহত আছে। পত্রিকা তেমন পেতাম না। তবে পেলেই পড়তাম।

এমন একটা দিন পত্রিকা খুলে আমার চোখ একটি নামে আটকে গেল।

ডায়েরি নন-ফিকশন

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

টেসলায় আমন্ত্রণ

Posted on February 12, 2023

সেসব আলাপের টুঁ শব্দটাও বাইরে বলা যাচ্ছে না, এনডিএ।

Read More

সাইকিয়াট্রিস্ট নোরা এবং অন্যান্য

Posted on June 20, 2022

একটা সিংহকে যদি ধরে নিয়ে এসে আপনি প্রতিদিন দুই কেজি ঘাস দেন, তাহলে সিংহের কিছু সমস্যা হবে। আমাদের, অ্যাজ আ হোল, মানবজাতির এখন হয়েছে সেই সমস্যা। 

Read More

অধ্যায় ০১ ⌛ থট প্রসেস

Posted on July 7, 2021July 7, 2022

প্রশ্ন না করে কোনও কাজ করে যাবে না। কোনও চিন্তা করা যাবে না।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

010423
Total Users : 10423
Total views : 26218
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes