Default image

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

আমেরিকান বইপড়ুয়ারা

জনের বন্ধুর কাছে জানলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চেনে। তার সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল আরেকজন বিখ্যাত ক্যারিবিয়ান লেখক। গীতাঞ্জলি কিনে রেখেছে। নামটা বললো অবশ্য ‘গিতালি?’ ঠিক করে দিলাম, “গীতাঞ্জলি। তবে কাছাকাছি গেছ। জন কিটস অনুবাদে সহায়তা করেছিলেন।” সে চেনে সত্যজিত রায়কেও। ফেলুদার ব্যাপারে জানে। ফেলুদাকে মনে করতে পারছিল, কিন্তু সত্যজিতকে না। গুগল করে দেখাতেই হাততালি দিয়ে উঠলো। অরুন্ধতী রায়কেও চেয়ে সে। আমাকে একটা কাগজে তার নাম লিখে দেখানোর চেষ্টা করছিল। গুগল করে বের করে দিলাম। দ্য গড অফ স্মল থিংস।

জেলিকস

এক বেচারি মেয়েকে লাগানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে ছিল এক লোক। মেয়েটা ত্রিশ মিনিট আগে আমার কাছে এসে একটা সিগারেট চেয়েছে, ওকে বললাম, “যদি পাঁচটা মিনিট অপেক্ষা করতে পারো, তোমাকে সিগারেট এনে দিচ্ছি।” সিগারেট আমারও লাগতো। কাজেই আমাকে ওটা আনতে হতোই। এনে দেখি ঐ লোক বেচারির পিছে লেগে আছে। লাগানোর ধান্ধা। ওকে সিগারেটটা দিয়ে বললাম, “খাও ভাই যতো ইচ্ছে।” একটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো, “আমার নাম জেনিফার।”

গোয়েন্দাগিরি

‘সাবাশ!’ গোবদা হাত দিয়ে ওর পিঠ চাপড়ে দেয় জুয়েল।’ প্রায় সবকিছুই ধইরা ফেললি! আরেকটা জিনিস বাকি – লেখাটা একটা মাইয়ার। সম্ভবতঃ – হাতের লেখা পাল্টাইছে যে লেখছে। মানে তোর পরিচিত ওই মাইয়া। আর না পাল্টাইলে অন্য কাওরে দিয়ে লেখাইছে।’ জুয়েল কলেজে গোয়েন্দা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।

আমি আবার তোমার আঙুল…

“আরে শোন। পরেরদিন এক হাত কাটা আংকেল বারান্দাতে আবারও বসেছেন। বিকালে ছাদে আবারও উঠলেন দুই হাত কাটা ভদ্রলোক। কি হাসি তাঁর। আর কি আনন্দ, খুশিতে লাফাচ্ছেন রীতিমত!” “শালা পাগল শিওর!” বললাম আমি, “দুই হাত কাটার পর হাসে যে বাইনসূদ, তার ব্যাপারে আমার আর কোন মন্তব্য নাই।”

আর কিছু বলবে?

‘আর কিছু বলবে?’ হাতঘড়ি দেখে জানতে চায় ইভা। মাথা নাড়লাম আমি। মেয়েটার একটা ডায়েরী আমার কাছে ছিল। ওটা দিতে এসেছি। আর কিছু বলার থাকে কিভাবে? ভাষা জিনিসটাকেই কেউ কেড়ে দিয়েছে আমার। কই? ইভা তো আজ আমার চোখ দেখেই সব বুঝে ফেলল না! কয়েক বছর আগের কথা মনে পড়ে যায়।

আর না দেখার দিন

দুটো ইঁদুর আমার চোখ খেয়ে ফেলছে। ইঁদুরগুলো নোংরা দেখতে। গোঁফগুলো কত মাস যে পানির চেহারা দেখেনি কে জানে! শুকিয়ে কাঠির মত খাড়া হয়ে আছে ওদের মুখের কাছে। তবে সময়ের সাথে ওরা হচ্ছে আর্দ্র। আমার অ্যাকুয়াস হিউমার ইঁদুরগুলোর গোঁফ ভেজাচ্ছে। খুশিতে ডানদিকের ইঁদুরটা আমার চোখে সদ্য করা গর্তটা থেকে মুখ তুললো। ডাকলোও একবার। চিঁ চিঁ শব্দ শুনে আরও কয়েকটা ইঁদুর চলে আসে। কামড়ে খাবে ওরা। ওরা আমার চোখ কামড়ে খাবে।

ক্যাথি

ফোনের অন্যপাশ থেকে টেলিফোন কাঁপানো হাসি দেন ফারুক চৌধুরী, ‘ছেলে জানে না – তবে এবার আমি নিজের আগ্রহেই ওকে দেশে টেনে আনছি কেন সেটা তোমাকে বলা যায়।’ ফোনের এপাশে চোখ টিপ দেন রাফিদ সাহেব, ’নির্ঘাত লাল টুকটুকে একটা বাঙালি বউ চাই তোমার?’ ওপাশে কাশির শব্দ শুনতেই দ্রুত কারেকশন দেন তিনি আবার, ’ছেলের জন্য আর কি!’ ফারুকের গলা থেকে আবারও টেলিফোন কাঁপানো হাসির শব্দ বের হয়, ’হাহাহাহা – একেবারে ঠিক ধরেছ। নাহলে দেখা যাবে বেলে মাছের মত চামড়ার কোন খ্রিস্টান মেয়ের সাথে ঝুলে গেছে। এই সমস্যা শুরু হওয়ার আগেই ঝেড়ে ফেলতে হবে। কি বল?’