Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা | অধ্যায় ০১ – রেকমেন্ডেশন

Posted on August 1, 2021February 6, 2023

প্লেনে ওঠার পর থেকে দারুণ সুন্দর একজোড়া চোখ আমাকে দেখছিলো। অথচ আমি তখন গুম হয়ে বসে আছি নিজের সিটে। রাগে কান লাল হয়ে আছে। এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকলাম সামনের দেয়ালের দিকে। ওখান একটা স্ক্রিন ঝুলছে। সেখানে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ভিডিয়ো চলছে। অসাধারণ সৃজনশীলতার ছাপ সেই ভিডিয়োতে, ফুটবল ও ফুটবলারদের দিয়ে প্লেনের সাধারণ নিয়মনীতি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে তাতে। পাশে বসে থাকা আকর্ষণীয় তরুণীর মতোই, দেয়ালের ঐ স্ক্রিনের সৃজনশীলতাও আমার মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলো না। সুতীব্র একটা নিঃশ্বাস ছাড়লাম। ফোঁস করে শব্দ হলো একটা।
সুন্দর চোখজোড়া আমাকে কেন দেখছিল তাও বুঝতে পারলাম। আমার হাবেভাবেই একটা ক্ষ্যাপা জন্তুর অভিব্যক্তি। নির্ঘাত ভাবছে, যে কোনও সময় তাকে ঘ্যাক করে কামড়ে দেবো কি না। তবে আমাকে এখানে একতরফা দোষারোপ করলে চলবে না। প্যান্টের বেল্ট ছিঁড়ে যাওয়ার পর পকেটের ভারী ফোন, মানিব্যাগ, পাওয়ারব্যাংকের চাপে তার নিচে নেমে যাওয়ার অনভূতি হয়েছে কখনো? তাহলেই বুঝতে পারবেন আমার রাগের উৎসটিকে।
ভাবছেনে মেটাফোর দিচ্ছি? চমৎকার কোনও রূপক বলে যাচ্ছি একটি পয়েন্ট মেক করার আশায়? না হে। ঘটনা ঠিক তা-ই ঘটেছিলো।
দেশের বাইরে আমার প্রথম ফ্লাইটটিকে ঠিক সময়ে ধরে ফেলার কথা ছিলো, আমিও এসেছিলাম সময়মতোই, তবে দেখা গেল আমি যখন এসেছি তখনই এসেছে বাকি যাত্রীরাও। পঁয়তাল্লিশ মিনিট সময় মোটেও যথেষ্ট হলো না, বিশেষ করে বোর্ডিংয়ের আগে যে নিদারুণ চেকিংটি হয়ে থাকে, তাতেই সময় শেষ হয়ে পেরিয়ে গেল আরো ৪টি মিনিট। যারা জানেন না তাদের জন্য বলে রাখি, এই পর্যায়ে এসে আপনার ব্যাগে থাকা যে কোনও ইলেকট্রিক ডিভাইস – যেমন আমার ক্ষেত্রে, দুটো পাওয়ারব্যাংক, দুটো মোবাইলফোন, একটি ব্লু-টুথ এয়ারফোন, একটি ভেপিং ডিভাইস, একটি ক্যামেরা, এক গিম্বলের ব্যাটারি ও চার্জার, ইত্যাদি আলাদা আলাদা করে ট্রে-র ওপর রাখতে গিয়েই দেখলাম দুটো ট্রে ভরে গেছে। (ব্যাটারি সম্বলিত কোনো ডিভাইস লাগেজে দেয়া নিষেধ, তাই এই হ্যাপা) তার ওপর ওখানে আপনাকে বেল্ট আর জুতো খুলে ট্রে-তে রাখতে হবে। এসেছেন ন্যাংটো, যাবেন ন্যাংটো – এয়ারলাইনসের হিসাব পরিষ্কার। এত রঙঢঙ যে আমি একাই করছি তা তো নয়। উপস্থিত আপামর জনতাও তা করছে। এবং সব মিলিয়ে দেরি হয়ে গেল। গেট দিয়ে ঢুকে দেখলাম, সাড়ে চারটা বেজে গেছে প্রায়, অথচ ৪.২৫ এ ফ্লাইট!
জুতো পরার কিংবা বেল্ট পরার ন্যুনতম চেষ্টা না করে ছুটলাম। বোর্ডিং পাসটি পাঞ্চ করলেন এক ভদ্রলোক, এবং তা কাজ করলো না। অতি স্বাভাবিক একটি ঘটনা, একে বলার হয় মার্ফির সূত্র। যখন একটি কিছু ভুল হবে, সবই ভুল হবে। পাশের টেবিলে বোর্ডিং পাস চালান করে দিলেন অগত্যা, সময় এখানেও লাগবে। অযথা। আমি তার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম, এটাই সুযোগ, দ্রুত বেল্টটা পরে ফেলা যাক!
পাবলিকলি বেল্ট পরার চেষ্টা করেছেন কখনো? আমি বলবো, না করে থাকলে, করতে যাবে না। বাড়তি প্রেশার কিংবা হিউমিলিয়েটির কারণে জোরেই টান দিয়েছিলাম বোধহয়, যতটা দরকার তার বেশি, পটাং করে ছিঁড়ে গেল! একটু পেছনে বসে থাকা স্থুলকায় এক আফ্রিকান-আমেরিকান তরুণী হাসি হাসি চোখে আমার কাণ্ড দেখে যাচ্ছে, মনে মনে হাসছে বোধহয়। কটমট করে তাকাতেই দেখলাম দ্রুত চোখ সরিয়ে নিজের ফোন দেখছে। ওদিকে পিসির সামনে বসে থাকা ভদ্রলোক বোর্ডিং পাস ফেরত দিয়ে বলছেন, “ক্লিয়ার। উঠে পড়ুন, উঠে পড়ুন।”
তখনও আমি খালি পায়ে আছি, উঠে আর পড়বো কোথায়। কাছের এক বেঞ্চে বসতে গিয়ে বুঝলাম, আজ নেংটু না হয়ে প্লেনে ওঠা সম্ভব হবে না। উঁহু। সরসর করে নেমে যাচ্ছে প্যান্ট-ব্যাটা। পকেটে লাখো জিনিস। তাদের বের করার উপায় নেই। চেকিংয়ের সময় বের করবেন কিছু? হয়ে গেল। ওদের বাড়ি থেকে গুছিয়ে ঢুকিয়ে এনেছেন, ব্যাগে পর্যাপ্ত জায়গা ছিলো বলে তখন মনে হয়েছে। অথচ প্লেন ছেড়ে দেবে – এমন চাপে যখন তাদের পুনরায় ঢোকাবেন, ব্যাগে অর্ধেক ঢুকিয়েই দেখবেন বাকিদের আর জায়গা নেই। চিন্তা না করে জুতো দুটো পায়ে গলালাম। একটা ফিঁতেও বাঁধলাম। তবে তারপর বুঝতে পারলাম আমি হচ্ছি শেষ যাত্রী। আর সব উঠে যাচ্ছে। স্থুলকায় তরুণীও লাইনের ভেতরে। অন্য ফিতেটাকে সরি বলতে বলতে এক হাত পকেটে রেখে (পড়ুন, এক হাত দিয়ে প্যান্ট খুলে যাওয়ায় নয়া কোনও ক্রাইসিস যেন না আসে তা সামলানোর চেষ্টা করতে করতে) দ্রুত লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। উঠে পড়লাম প্লেনে, সর্বশেষ ৩ যাত্রীর একজন হিসেবে।
নিজের সিটটা খুঁজে যাচ্ছি, চোখ পড়লো দারুণ মায়াবী একজোড়া চোখের ওপর। প্লেনে উঠে প্যান্ট নিয়ে গবেষণা শুরুর যে ইচ্ছেটি ছিলো তাকে গলা টিপে মারতে হলো। ছেলেদের ঐ এক দুর্বলতা। সুন্দর মেয়েদের সামনে তারা নিজেদের পাছা বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন কোনও গবেষণা করবে না।
ধপ করে বসলাম তো বটেই। গরম চোখে তাকিয়ে থাকলাম সামনের দেয়ালের দিকে। এমনটি হওয়ার কথা ছিলো না। আজকের দিনটার জন্য আমি গত দেড়টি বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজ এমন হওয়া একেবারেই অনুচিত।
উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম পছন্দ ছিলো যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম কারণ, এখানে দুনিয়ার অনেকগুলো ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় আছে এবং তারা আর যে কারো থেকে সহজে চড়াই পাখির মতো এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়াউড়ি করতে দেয় বলে জনশ্রুতিও আছে। অর্থাৎ আপনি যদি মনে করেন আপনার জন্য ‘অমুক পথ’টি সঠিক নয়, তবে সেখানে দেড়টি বছর দিয়ে ফেলেছেন, সম্ভাবনা আছে দ্রুতই তা সংশোধন করে নিজের পছন্দের বিষয়ে সরে আসতে পারবেন, কোনওরকম হ্যাসল ছাড়াই, যেহেতু প্রচুর অপশন আছে এবং কম-বেশি একই সিস্টেম বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফলো করছে। দ্বিতীয় কারণটি একান্তই ব্যক্তিগত, এবং আমার লেখক ক্যারিয়ারের সাথে এর সম্পর্ক আছে। যেহেতু উপন্যাস আমার শক্তির জায়গা, কালচারাল ডাইভার্সিটি দেখতে পারা ও অনুভব করা আমার জন্য অপরিহার্য একটি দায়িত্ব। অধিকাংশ গ্রেট রাইটারই নিজের কুয়ো থেকে বেরিয়ে বাইরে উঁকি দিয়ে এসেছেন, সেটা তাদের একটি আলাদা এজ দিয়েছে। আর আমেরিকার থেকে ভালো জায়গা আর কোথায় আছে দুনিয়াতে, যেখানে সব সংস্কৃতির মানুষের মিশেল আমরা দেখতে পারবো?
কাজেই, ২০১৮য় গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করার পরই ইচ্ছে ছিলো উচ্চশিক্ষার জন্য চেষ্টা করলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেকে গুছিয়ে অ্যাপ্লাই করতে করতে ২০১৯ সাল হয়ে যায় অবশ্য, এবং ডেডলাইনগুলো তখন প্রায় শেষদিকে। ২০১৯ সালে আমি একটিমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপ্লাই করার চেষ্টা করেছিলাম, আর সেটি ছিলো ডার্টমাউথ। আইভি লীগ রিসার্চ ইউনিভার্সিটি। অ্যাপ্লাই করলেও ওখান থেকে ডাক আসতো বলে আমার মনে হয় না, তবে আমি সেটাও করতে পারিনি। প্রফেসরদের রেফারেন্স নেয়ার ক্ষেত্রেও দেরি করে ফেলেছিলাম।
ওটা ছিলো আমার পয়লা ভুল।

🇺🇸 নির্দেশনা 🇺🇸
প্রথম পরামর্শ – সবার আগে রেকমেন্ডেশন কাদের থেকে নেয়া হবে তা ঠিক করতে হবে। তখনও হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ও ঠিক করা হয়নি, কীভাবে অ্যাপ্লাই করতে হয় তাও জানা হয়নি, এ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটিও হয়নি কিছু, তবে সেসব পরে। সবার আগে আন্ডারগ্র্যাডের প্রফেসরদের ইমেইল/সরাসরি সাক্ষাত করে জানান যে আপনি এবার অ্যাপ্লাই করতে চলেছেন। খেজুরে আলাপ করুন বা না করুন, ভদ্রভাবে জেনে নিন তারা আপনাকে রেকমেন্ড করতে চায় কি না।

পরের অধ্যায় পড়তে এখানে ক্লিক করুন – অধ্যায় ০২ – জিআরই এবং IELTS/TOEFL

উচ্চশিক্ষা নন-ফিকশন

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা | অধ্যায় ০২ – জিআরই এবং IELTS/TOEFL

Posted on August 1, 2021February 6, 2023

জর্জ বুশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল এয়ারপোর্ট, হিউস্টন।
কাঁচের ওপাশে বসে থাকা কাস্টোমসের নীলচোখের ভদ্রলোক আমার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে আছেন।

Read More

আইরিশ ‘সাইকিক’ ও ভূতেদের দর্শন

Posted on February 5, 2023

টেক্সাস এমনই আনপ্রেডিক্টেবল। এই ফেব্রুয়ারি এসে এমন শীত আমরা কেউ আশা করিনি।

Read More

কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২

Posted on February 5, 2024February 5, 2024

জনগণ যখন জানতে চান, কোন বইটা থেকে পড়া শুরু করবো? সেটার উত্তর জনগণের কাছ থেকেই আনা গেল। ৪৬৪ জনের ভোট থেকে জানা গেল আমার লেখা পাঠকের চোখে সেরা লেখা হচ্ছে (১) জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে (২০২০) (২) যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল (২০১৮) (৩) ছারপোকা – দ্য ব্যাটল অফ মাহেন্দ্রপুর…

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

009516
Total Users : 9516
Total views : 23950
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes