KP Imon

Words Crafted

সোশিওপ্যাথ প্রতিদিন আপনার সাথে মিশবে না

সোশিওপ্যাথদের সোশাল/লাভ/ফ্রেন্ডশিপ ল্যাঙুয়েজই হচ্ছে “Leave me alone.”
যে সোশিওপ্যাথকে আপনি ঘাঁটাবেন না, আপনি তার সবচেয়ে বড় বন্ধু। দুই বছর হোক, দশ বছর পর হোক, সে আপনার সাথে দেখা করতে চাইবে। কথা বলতে চাইবে। (এটা সোশিওদের জন্য রেয়ার। তারা কারো সাথে দেখা করতে চায় না সহজে) যখন দেখা হবে তখন আপনার সাথে এমনভাবে মিশবে যেন শেষ দেখা গতকাল হয়েছে।
যে সোশিওপ্যাথকে আপনি ঘাঁটাবেন না, আপনি তার সবচেয়ে প্রিয় বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড। দুই বছর হোক, দশ বছর পর হোক, সে আপনার সাথে দেখা করতে চাইবে। কথা বলতে চাইবে। যখন দেখা হবে তখন আপনার সাথে এমনভাবে মিশবে যেন শেষ দেখা গতকাল হয়েছে।
যে সোশিওপ্যাথকে আপনি ঘাঁটাবেন না, আপনি তার সবচেয়ে ভালো পরিবারের সদস্য। দুই বছর হোক, দশ বছর পর হোক, সে আপনার সাথে দেখা করতে চাইবে। কথা বলতে চাইবে। যখন দেখা হবে তখন আপনার সাথে এমনভাবে মিশবে যেন শেষ দেখা গতকাল হয়েছে।
যে সোশিওপ্যাথকে আপনি রুটিন ধরে অমুক করা লাগবে, তমুক করা লাগবে, প্রতিদিন বিকালে আড্ডা দিতে হবে, সপ্তাহে একবার ভিডিওকল করা লাগবে, তিন মাসে তমুক করা লাগবে, ছয় মাসে চমুক, বছরে অ্যানিভার্সারি, বার্থডে, ইত্যাদি – সে হাতে প্রাণটা নিয়ে আপনার থেকে দূরে দূরে থাকবে। সোশিওপ্যাথের একটাই চাওয়া, “ভাই, আমাকে তুমি সাপোর্ট দাও অথবা না দাও, আমার সাথে কথা বলো অথবা না বলো, ঘুরো অথবা না ঘুরো, আমার আপত্তি নাই। তুমি তোমার মতো থাকো। কিন্তু আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।”
যে তাকে যত বেশি তার মতো থাকতে দেবে তার সাথে সে তত বেশি থাকতে চাইবে। সেটা দশ বছরে দুইবার হলেও।
এতে আমি খারাপ কিছু দেখি না। বরং এটাই স্বাভাবিক।
ইদানিং মেন্টাল হেলথের নাম করে এই মানুষগুলোকে নর্মিরা একেবারে বন্দুক তাক করে ধরেছে। এসব আমি পাত্তা দেই না একেবারেই। নর্মিদের থেকে সোশিওপ্যাথদের মেন্টাল হেলথের অবস্থা বেশি খারাপ। অথচ নর্মিদের আবদার হচ্ছে সোশিওপ্যাথ তার সাথে অমুক অমুক করেনি তারমানে তার সাথে “সাইকোলজি টার্ম ০১”, “সাইকোলজি টার্ম ০২”, “সাইকোলজি টার্ম ০৩”, “সাইকোলজি টার্ম ০৪” ইত্যাদি করা হয়েছে।
ট্রুলি স্পিকিং, নর্মিরা সোশিওপ্যাথদের সাথে যা করে জ্বালাতন করে তা তাদের কতগুলো সাইকোলজিকাল সমস্যা জন্ম দেয় তা তালিকা করে শেষ করা যাবে না। অথচ নর্মিদের ভাব দেখে মনে হয় সোশিওপ্যাথ তাদের জীবন শেষ করে দিয়েছে আর তারা একেকজন খুব উপকার করেছে সোশিওপ্যাথের মানসিক অবস্থার।
না ভাই।
আমি প্রায় ১০-১২ টা এক্সপোজ স্টোরি পড়লাম গত এক বছরে।
সোশিওপ্যাথের দল আপনাদের আপনাদের মতো থাকতে দিয়েছে।
আপনি আপনার নর্মি-সংজ্ঞায় ব্যবহার পান নাই বলে সোশিওপ্যাথ ছেলেটার বা মেয়েটার দিকেই উলটা বন্দুক তুলেছেন।
কেন?
সোশিওপ্যাথ প্রতিদিন আপনার সাথে মিশবে না। অ্যাটাচমেন্টে যাবে না। অবশ্যই যাবে না। মরবে নাকি? আপনি একটা মানুষকে গুলি করে মেরে ফেললে আপনার সাইকোলজিতে যতটা চেঞ্জ আসবে, যত পিটিএসডি হবে, একজন সোশিওপ্যাথের জীবনে তার সমপরিমাণ চেঞ্জ আসবে, পিটিএসডি হবে যদি আপনার সাথে তার নর্মিদের মতো মেশা লাগে।
তাই বলে সোশিওপ্যাথ বন্ধু বানাবে না? প্রেম করবে না? পরিবার থাকবে না তাদের?
আপনাদের এক্সপোজ পোস্ট দেখে মনে হয় তাদের বন্ধু, প্রেম, পরিবার থাকাই দোষ। বুঝেন নাই তাদের, বেশ কথা, তাদের পেছনে না লাগাই ভালো হবে। অবশ্য এটা বলে লাভ তেমন নাই, নর্মিরা নিজেদের ভালো পেলেই হলো। ঐ নিজেদের সংজ্ঞায় কেয়ার, কমফোর্ট, সেন্স অফ রেসপন্সিবিলিটি, সোশাল ফিডব্যাক ইত্যাদি পেলেই খুশি।
সোশিওপ্যাথ বোঝার ঠেকা পড়েনি তাদের।
এমনি এমনি তো আর সোশিওরা নর্মি গায়েব করে দেয় না। এইসব জ্বালাতনেই তা করে।

কিশোর পাশা ইমন

Website: http://kpwrites.link

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *