KP Imon

Words Crafted

রিহিউম্যানাইজিং স্টেম কমিউনিটি

স্টেম কমিউনিটিকে রিহিউম্যানাইজ করা দরকার। স্টেম বলতে বোঝানো হয় science, technology, engineering and math (STEM) –
 
আমি পঞ্চাশভাগ এই পরিবারে বিলং করি বলে কিছু আত্মসমালোচনা করি। স্টেম কমিউনিটির মধ্যে যান্ত্রিকতা যে শুধু আষ্টেপৃষ্ঠে ঢুকে পড়েছে তা না, এই যান্ত্রিকতা নিয়ে আবার গর্ববোধ আছে সবার। এঞ্জিনিয়ারিং ক্লাসে “এটা তো লিবারেল আর্টসের ক্লাস না” জাতীয় কথা দেশে তো অহরহ বলা হয়। আরেকদল মাতবরকে দেখবেন পহেলা বৈশাখে এসে কলাবিজ্ঞানী বলে লিবারেল আর্টসকে অপমান করার চেষ্টা করবে।
 
আমার কথা হলো, লিবারেল আর্টসের পোলাপান চিল হয়ে পড়াশোনা করতে পারলে স্টেম কেন পারবে না? এটা কি একটা এলিটীয় ব্যাপার যে ফাইজলামি না করাই ক্রেডিট? সিরিয়াস হয়ে থাকাই ক্রেডিট? ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ইলেকট্রিকাল, ম্যাথ, মেশিন পড়বে বলে সিরিয়াস হয়ে থাকতে হবে? আমি এই ফ্যালাসিটাই বুঝি নাই কখনো।
 
পড়াশোনার প্রেশারের আলাপ করছি না এখানে। স্টেম ফিল্ডে খুব কম মানুষের রিপ্লাইয়ে কোনধরণের প্রাণ দেখবেন। অথচ একটা মার্কেটিং মেজরের মানুষের সাথে আলাপ করতে গেলেই দেখবেন একটা প্রাণচাঞ্চল্য, হাসিখুশি ভাব। এইটা পড়াশোনার চাপের ব্যাপার না, কালচারের সমস্যা। স্টেম কালচার খুব ভয়ঙ্কর হয়ে আছে অনেকগুলো বছর ধরেই। এই দেয়াল ভাঙার চেষ্টা আমি করি, হালে পানি পাই না। ফেসবুকের আলাপ করছি না, ক্লাসরুমে আলাপের টোনটা লাইট রাখার চর্চা, সারকাজমের চর্চার কথা বলছি। কিন্তু পুরো বিষয়টা এঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডের জন্য এতই আচানক যে অনেকে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান। কিন্তু আমাদের এটা শুরু করতে হবে। রামগড়ুরের ছানা হওয়ার শর্ত তো নাই যতই কঠিন সাবজেক্ট হোক।
 
লিবারেল আর্টস, মার্কেটিং, মাস কমিউনিকেশন যেমন চিল থাকে, এঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথ ঠিক তেমনই চিল থাকবে। এমন বেশি কিছু চাওয়া নয়। কালচার ফিক্স করতে হবে।
 
এই আলাপের শানে নুজুলটা বলে ফেলি, গতকাল একটা পোস্ট দেখলাম একজন সাহায্য চেয়েছেন জিআরই দেবার ব্যাপারে, তার অ্যাংক্সাইটি অ্যাটাক হয়। পরীক্ষার আগে যেতে হয় ডাক্তারের কাছে। পরীক্ষা খারাপ হলে কতটা খারাপ করা যাবে এ নিয়ে চিন্তায় আছেন বোঝা যাচ্ছে। স্টেম ফিল্ডের জনগণ সেখানে একেবারে মেশিনের মতো গিয়ে বললো, “ভয়ের কিছু নেই।” “সাহস রাখুন।” “পেরে যাবেন।” “দিয়ে ফেলুন, পারবেন” ধরণের কথা। (এসব নয়, তবে মূলভাব এমনই। তবে আমি কমেন্ট কপি করবো না, কে কোনদিক থেকে অফেন্ড হয়!)
 
আরে ভাই একটা মানুষের পরিষ্কার মেডিকেল কন্ডিশন দেখা যাচ্ছে। এমন রেয়ার কিছু নয়। অ্যাংক্সাইটি ম্যানেজমেন্টের কত্তো ট্রিটমেন্ট! অথচ স্টেমবাসী শুরুতেই লাফ দিয়ে চলে গেছে “চ্যালেঞ্জ উতরাতে হবে না? জীবন কি ছেলেখেলা?” মুডে।
 
উনাদের দোষ এমন নয়, এটা স্টেম কালচারে সমস্যা।
এই কালচার ফিক্স করতে হবে।

কিশোর পাশা ইমন

Website: http://kpwrites.link

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *