Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

ইউনিভার্সিটিতে বোমা!

Posted on February 12, 2023

সকালের প্রথম টেক্সট এলো কেইলিনের কাছ থেকে, “এই, বোমার ঘটনা শুনেছো? ক্যাম্পাসে নাকি আজ বোমা মারবে। তুমি কই?”

আমি তখন হিমশিম খাচ্ছি প্রপোজালের প্রেজেন্টেশন তৈরির চাপে। আজকে আমার ডেমো প্রেজেন্টেশন দেয়ার কথা প্রফেসর, এবং তার ল্যাবের জনগোষ্ঠির সামনে। এর মধ্যে বোমা এল কোত্থেকে!

আমি এক হাতে পাওয়ারপয়েন্টের স্লাইড বানাতে বানাতে অপর হাতে ওকে রিপ্লাই দিলাম, “কোন বোমা? কীসের বোমা?”

তখন ও আমাকে একটা স্ক্রিনশট পাঠালো। টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমেইল। কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের চারিটি দালান বোমা মারিয়া উড়াইয়া দেবার হুমকি দিয়া কে বা কাহারা লিফলেট বিতরণ করিয়াছে। দালানগুলো হইলো হাওয়ার্স, থিয়েটার, কেমিস্ট্রি, আর এজুকেশন বিল্ডিং। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সশস্ত্র অবস্থান নিয়াছে এবং প্রতিটি দালানের কোনাকাঞ্চিতে উঁকি মারিয়া দেখিতেছে। চিন্তার কোন কারণ নাই, আমাদের পুলিশের সঙ্গে আরও কাজ করিতেছে নিয়াছে এটিএফ, ইউটি অস্টিন পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং এফবিআই।”

এটিএফ, হোমল্যান্ড, আর এফবিআই। কর্ম সেরেছে!
জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে!

কেইলিন জানালো একটু পর ওর ক্লাস আছে বটে, তবে ওসব কোন বিল্ডিংয়ে নয়। জানালো, “পুলিশ তো কুকুর নিয়ে ঘুরঘুর করছে সবখানে। শুনলাম ফিজি ফ্র্যাটারনিটির দুটো ছেলে এই ঘটনার পেছনে নাটের গুরু।”

ওর কাছে ভেতরের খবর থাকা স্বাভাবিক। থার্ড ইয়ারের ছাত্রী। ক্যাম্পাসে কে কোথায় পাদ মারলো তার বিশদ তথ্য ওদের কাছে থাকে। আন্ডারগ্র্যাডে থাকা অবস্থায় আমরাও তাই করতাম। বলতাম, ক্যাম্পাসে দেয়ালেরও কান আছে।

ভেতরের তথ্য জানামাত্র লক্ষ্য করলাম আমার বুকের গভীর থেকে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস বেরিয়ে গেছে। অথচ তখনো বোমা খুঁজে পাওয়ার বা না পাওয়ার কোন খবর পুলিশ দিতে পারেনি।

স্বস্তির মূল কারণ হচ্ছে বোমার হুমকি দেবার ঘটনাটি ঘটিয়েছে যারা তাদের কেউ বাংলাদেশি নয়, এবং আগামী দিনগুলোতে স্রেফ বাংলাদেশি বা ভারতীয় চেহারার অধিকারী হওয়ার কারণে আমাকে কারও লাথি খেতে হবে না।

কিছুদিন আগে এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল লাইব্রেরির ফার্স্ট ফ্লোরে। এক ছেলে এক মেয়েকে যৌন হয়রানি করে পালিয়ে গেছিল। তার ছবি সাথে সাথে সিসি ক্যামেরা থেকে বের করে টেক্সাস স্টেটের প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠানো হয়েছে এক ঘণ্টার মধ্যে। আমি যুগপৎ ক্রোধ নিয়ে শুয়োরটিকে দেখলাম। আমাদের জাতিগোষ্ঠীর লোক। ভারতীয়, বাংলাদেশি, কিংবা শ্রীলঙ্কান। লজ্জায় মারা গেলাম।

বদমাশটিকে টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটির পুলিশ সে রাতেই গ্রেফতার করতে পেরেছিল। ছবি ছড়িয়ে যাওয়ার পর তাকে ধরিয়ে দিতে বেশি সময় লাগেনি। ভূত থেকে ভূতের চাইতেও বেশ কার্যকর পদ্ধতি ওটা। ব্যাটাকে গ্রেফতারের পর স্বস্তি পেয়েছি ঠিক, একই সাথে মনের ভেতর খচ খচ করাটা থামেনি। আমি জানি আমাদের সাউথ এশিয়ানদের মধ্যে মেয়েদের কীভাবে দেখার প্রবণতা আছে – তারা মেয়েদের সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন মনে করে অভ্যস্ত। সেটা রাষ্ট্র হয়ে গেল যা হোক। স্রেফ সাউথ এশিয়ান বলে আমার চেহারাটা দেখা মাত্র আমার ক্যাম্পাসের মেয়েরা মনে করবে আমি সুযোগ পেলেই তার বুকের দিকে তাকিয়ে থাকবো! কী একটা লজ্জার ব্যাপার।

এটা যে বাড়িয়ে বলছি এমন নয়। আমাদের যে মেয়েদের না দেখার ভান করা সমস্যা আছে, এবং দেখলে আবার বুকের দিকে তাকিয়ে থাকার দোষটি আছে – এমনটা ওরা ফিল করেছে তা সরাসরি এখানকার এক মেয়ের সাথে আলাপ করে আমি জেনেছিলাম। তাকে ছাত্রী না, ‘স্রেফ একজন মেয়ে’ ফিল করিয়েছিল আমারই গর্বিত দেশবাসীরা। তারা বাংলাদেশের নাম রওশান করায় আমার মনে হয়েছিল একটা গর্ত করে মাটিতে ঢুকে যাই। সেদিন আমি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটি কাজ করেছিলাম। বাংলাদেশের ছেলেদের ব্যাপারে সুগারকোট করে অনেক কিছু বলেছিলাম। বলতে পারিনি, “বইন গো, বেশিরভাগই বাইনচোদ। তোমার পিছে তোমারে নিয়া নোংরা কথা বলে।”

এই জাতির একজন হয়ে জন্মেছি যখন, এমন কিছু জাতিগত ট্যাগ তো পড়বেই আগে কিংবা পরে।
বোমা হামলাকারীদের প্রসঙ্গে তাই সবার আগে চলে এসেছিল সেই উদ্বেগ।
ইসলামফোবিয়ার সময় এসেছিল যখন নাইন এলিভেনের পর পর, তাদের অনুভূতি কেমন ছিল তা চিন্তাও করা যায় না। ভালো মানুষরা বিব্রত হয়েছিলেন এমন, তবে ওটা ছিল আরও সিভিয়ার। হামলাও হয়েছে তখন। কিন্তু খারাপ মানুষরা তখনও ইনিয়ে বিনিয়ে মুসলমান সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সাফাই গেয়েছিলেন।

আমার জাতির লোক আছে এমন। যারা খারাপ। তারা বলে ফেলে, “তাকানোর মতো জামা পরলে তো তাকাবই।”

মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশিদের জন্য যে সম্মানটা কিছু মানুষ অর্জন করেছিল, তা দুই সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংস করেছে অন্য বাংলাদেশিরা। লাখ টাকার বাগান খেয়েছে এক টাকার ছাগলে। বোমাবাজির হুমকি দেয়া লিফলেটের পর কেইলিন যখন আমাকে বলেছিল এটা ফিজি ফ্র্যাটের তথা ফাই গামা ডেলটার কাজ – স্বস্তির নিঃশ্বাস কেন ফেলেছিলাম তা হয়তো এখন স্পষ্ট হয়েছে।

২.
বোমার হুমকির পর কর্তৃপক্ষের যে দিকটা সবচেয়ে চোখে পড়েছে, তা হল – এরা কোনরকম টেরোরিজমের সাথে কম্প্রোমাইজ করেনি। একটা বিল্ডিংও বন্ধ করে দেয়নি, করেনি ইভ্যাকুয়েট। তাদের কথা হচ্ছে, স্রেফ হুমকি দিলেই বাড়ি বন্ধ করে দেব – এমন দিন আজও আসেনি। এই মনোভাবকে আমি দাঁড়িয়ে স্যালুট দেই। গোটা জীবন আমি এটাই ধারণ ও প্রচার করে এসেছি।

কেউ এসে আমাকে ‘মাথা ফেলে দেব’ বলা মাত্র সব বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যাবো এমন শিক্ষা আমি পাইনি। আমি জেনেছি, সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বড় কাপুরুষ। কারণ তারা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে অস্ত্র ও বোমা দিয়ে ভয় দেখায়। তাদের কাছে নতি স্বীকার করার প্রথম ধাপটা হচ্ছে তাদের ভয় পাওয়া। অধিকাংশ মানুষ তাদের ভয় পেয়ে থাকেন। সেটা ছাত্রলীগ হোক কিংবা জ’ঙ্গিবাহিনী।

জ’ঙ্গিবাহিনী অমুক বাড়ি উড়িয়ে দেব বলামাত্র ভিডিয়ো ডিলেট করা কাপুরুষ আমরা দেখেছি। অন্তত আমি খুশি, টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটি আজ তেমন কিছু করেনি। সত্য কথাটা হচ্ছে, সত্যিকারের বোমা যদি থেকেও থাকতো আর তাতে আমিসহ উড়ে যেতাম – সেটা টেন টাইমস বেটার, সন্ত্রাসীর হুমকি পাওয়া মাত্র টিভি থেকে শো নামিয়ে ফেলা, ইউটিউব থেকে ভিডিয়ো নামিয়ে ফেলা, ফেসবুক থেকে পোস্ট ডিলেট করে ফেলা, কর্মীকে ছাটাই করে দেয়া ইত্যাদির থেকে।

বোমায় ২০০ জনের মৃত্যু হলে তা অপূরণীয় ক্ষতি, বিশেষতঃ অসম্ভব সম্ভাবনাময় ছাত্র-ছাত্রীরা মারা গেলে তো আরও। কিন্তু এই ক্ষতি একটি সিস্টেমের, একটি দেশের, একটি প্রকাশনীর, একটি রাষ্ট্রের সন্ত্রাসীর কাছে জিম্মি হয়ে যাওয়ার থেকে অনেক অনেক কম ক্ষতি।

কাজেই, টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আজ আমরা শিক্ষা নেবো।
প্রাণ গেলে যায় যাক, কখনোই সন্ত্রাসীদের হুমকির কাছে মাথা নত করবো না আমরা।

** পরিস্থিতি সন্ধ্যা পাঁচটা চল্লিশের দিকে স্বাভাবিক হয়ে আসে, যখন পুলিশ সবগুলো বিল্ডিং সুইপ করে নিরাপদ ঘোষণা করে। তবে আগামি কিছুদিন পুলিশি তৎপরতা থাকবে ক্যাম্পাসে।

১৫ই নভেম্বর, ২০২২

আমেরিকা-নামা নন-ফিকশন

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

রিভিউ – ভুল সংশোধন

Posted on October 11, 2023

হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. যেসব কথা বলছিলেন তাতে করে তাকে একজন নমঃ নমঃ করতে থাকা ব্যক্তিপূজারির বেশি মনে হয়নি।

Read More

আমার যত প্রকাশক

Posted on February 5, 2024February 5, 2024

অপু ভাই একদিন ফোন দিয়ে বললেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অফিসার আমার সাথে কথা বলতে চান, আমার ফোন নাম্বার কি দেবেন। আমি ভাবলাম, “নিশ্চয় কোন আকাম করেছি। এখন আমার পাছা মারবে।”
কিন্তু একবুক সাহস করে বললাম, “দেন।”

Read More

সন্তানগ্রহণের চরম বিরোধী আমি

Posted on June 28, 2022

কাজেই আমি লড়ি। আমি লড়ি তাবৎ পর-অধিকার চর্চার বিরুদ্ধে। নিজের জন্য নয়।
আমাদের অনাগত সন্তানদের জন্য।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • The Son of Bangladesh: KP’s Voice for the Marginalized
  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া

Analytics

010288
Total Users : 10288
Total views : 25501
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes