Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

সন্দেহ

Posted on February 13, 2023

নাকের সামনে পেপারটা ধরে মনযোগের সাথে পড়ার ভান করে রিয়াজ। ওর সন্দেহ শেষ পর্যন্ত সত্যি হতেই যাচ্ছে!
আড়চোখে তাকায় কিছুটা দূরে পার্কের বেঞ্চে বসে থাকা উর্মিলার দিকে। উর্মিলাকে ফলো করতে করতেই যত্ত ঝক্কি!
✭
উর্মিলা রিয়াজের বোন। পিঠাপিঠি। ক্লাস টেনে পড়ে উর্মিলা। রিয়াজ কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে।
গত কয়েক দিন ধরেই বোনের গতিবিধি অত্যন্ত সন্দেহজনক ঠেকছে। রাত্রিবেলায় উর্মিলার ঘর থেকে ওর গলা শুনতে পায় প্রায়। তার ওপর সারাদিন মোবাইলে উর্মিলার টেপাটেপি। যে মেয়ে আগে স্কুল থেকে সঠিক সময়ে ফিরে আসত তারই এখন কখনো এক কখনো দেড় ঘন্টা লেট হয়।
‘নিশ্চয় কোন দুষ্ট ছেলের মিষ্টি কথায় ভুলে – উর্মিলা গেছে ঝুলে!’ প্রাণের দোস্ত ফরহাদকে বিষয়টা জানাতে গিয়ে এমনই উত্তর পেলো রিয়াজ।
‘তুই শিওর?’
‘সাতানব্বই শতাংশ।’ মাথা দোলায় ফরহাদ।
ফরহাদ ফালতু কথা বলার মানুষ না। অসম্ভব ট্যালেন্ট একটা ছেলে – পড়াশোনায় যেরকম এগিয়ে তেমনি তার উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা। কাজেই সাড়ে সর্বনাশের গন্ধ পায় রিয়াজ।
ভাই মাত্রই ছোটবোনের নিরাপত্তা চিন্তায় থাকে অতিমাত্রায় শঙ্কিত। আর আজকাল বাংলাদেশে বাটপার তো অপ্রতুল। শেখ মুজিবের যুগেও কম ছিল – তাই বা কে বলবে? সাধে কি আর উনি আক্ষেপ করে গেছেন –’অন্য দেশের কত কিছু থাকে – আর আমার দেশভর্তি চোর। চোর এক্সপোর্ট করতে পারলে আমাদের আর অভাব থাকত না…’
এক্সপোর্ট কোয়ালিটির বাটপারের হাতে উর্মিলা পড়ে গেলে সেই ছেলেকে উর্মিলার স্বপ্নের রাজপুত্র লাগা স্বাভাবিক। এই রাজকুমারের সাথেই বাংলা সিনেমার উড়ুক্কু ভিলেন রিয়াজের লড়াই হবার কথা। তবে ইনার খোঁজ পাওয়ার উপায় কী? মেয়ের ভাইয়ের সামনে পড়ার জন্য ব্যগ্রতা দেখিয়েছে এমন বাঙালি প্রেমিক তো মেলা ভার। তবে উপায়?
এবার মাথায় সহজ এক সমাধান চলে এল রিয়াজের। উর্মিলা প্রতিদিন দেরি কেন করে? সেই ছেলের সাথে দেখা করার জন্য নিশ্চয়? তাহলে সমাধানটা জলবৎ তরলং। উর্মিলাই তাকে বয়ফ্রেন্ড বাবাজির কাছে নিয়ে যাবে।
উর্মিলার স্কুল ছুটির পর ওকে স্রেফ ফলো করা লাগবে।
পরদিনই কাজে নেমে পড়ল রিয়াজ। স্কুলের মোটামুটি দূরত্বে চায়ের দোকানে বসে সিগারেট ধরায় একটা। সিগারেটের অভ্যাস হয়েছে বেশিদিন হয়নি। খুব বেশি খায় এমন নয়, তবে টেনশনে থাকলে জিনিসটা ম্যাজিকের মত কাজ করে। স্কুল ছুটির দশ মিনিট মত আছে। এই সময় আরও ভয়ানক একটা সম্ভাবনা উঁকি দিল রিয়াজের মাথায়।
ওই ছেলেটার সাথে দেখা করার উন্মাদনায় উর্মিলা একেবারেই স্কুল মিস দেয় না তো? হয়তো বাসা থেকে বেরিয়ে ঐ ছেলের হাত ধরে অজায়গায়-কুজায়গায় চলে যায় বোনটা। সেক্ষেত্রে এখানে এসে বসে থেকে লাভ কি?
হার্টবিট বেড়ে যায় রিয়াজের। অপরিচিত একটা ছেলের সাথে ওর বোনের অতিক্রান্ত সময় দেড় ঘন্টা থেকে সাড়ে সাত ঘন্টা হয়ে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে, এই দীর্ঘ সময়ে ওরা কি করে কে জানে!
সিগারেটের ধোঁয়া নাক মুখের সাথে সাথে যেন কান থেকেও বের হতে থাকে রিয়াজের।
স্কুল ছুটির ঘন্টা কানে এল এ সময়।
দোকানদার মামাকে বলে আরেকটা সিগারেট ধরাল রিয়াজ। ওর ছোট্ট বোনটা কখন কখন যে এতবড় হয়ে গেল – ও টেরই পেল না। হঠাৎ – একেবারেই হঠাৎ ওদের মাঝে দূরত্ব বেড়ে গেছে অনেকখানি। উর্মিলার নতুন জগতে ওর আর ঢোকার সুযোগ নেই। আজ যখন ও বোনের বয়ফ্রেন্ডের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যাবে তখনও তার কথা আর কানে তুলবে না মেয়েটা।
এ সময় উর্মিলাকে বেরিয়ে আসতে দেখল রিয়াজ। সাথে আর দুইটা মেয়ে।
সরাসরি ওদিকে তাকিয়ে ছিল এতক্ষণ। চোখ এবার অন্যদিকে সরাল রিয়াজ।
চোখের কোণ দিয়ে খেয়াল করতে থাকলো বোনকে। নিজে দোকানের অন্ধকার একটা কোণে বসে আছে। যাতে হঠাৎ করে তাকালেও উর্মিলা ওকে দেখতে না পায়। তবুও স্বস্তির একটা পরশ বুলিয়ে দেয় কেউ রিয়াজের হৃৎপিন্ডে। মেয়েটা অন্তত স্কুলে ঠিকই আসে। এখন বাকি সময়টা কোন ‘বেজন্মা’র সাথে কাটায় তা বের করে ‘বেয়াদব’টাকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিতে পারলেই রিয়াজের কাজ শেষ।
উর্মিলারা যথেষ্ট এগিয়ে গেলে সিগারেটের গোড়াটা ফেলে উঠে দাঁড়ায় রিয়াজ।
✭
উর্মিলার বান্ধবী দুইজন দুই পথে চলে গেল। একটা রিকশা নিলো মেয়েটা। পরের খালি রিকশা থামিয়ে পিছে লেগে থাকে রিয়াজ।
ফলো করতে করতে অবশেষে যখন এই পার্কে এসে থামে উর্মিলার রিকশা – বদ্ধমূল হয় রিয়াজের ধারণা। পার্কটা তরুণ-তরুণীদের উদ্ভট ভঙ্গিমায় প্রেম করার দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত। রিয়াজের মাথায় প্রতিহিংসার আগুন এখন। নিজের বোনকে স্কুল থেকে সরাসরি এখানে আসতে দেখলে কোন ভাই কি পারবে শান্ত থাকতে?
পেপারওয়ালা দেখা গেল একজন। গেটের পাশে বসে আছে। অলস ভঙ্গিতে মাছি তাড়াচ্ছে একটা ন্যাকরা দিয়ে। পেপার বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপনের দরকার নেই, এই প্রেমভূমিতে কেউ খবর পড়ার জন্য পেপার কেনে না – পশ্চাদ্দেশ স্থাপন করে বসে পড়ার জন্য কেনে! রিয়াজও একটা কিনলো, তবে চেহারাটা ঢাকার জন্য।
উর্মিলা অলরেডি বসে পড়েছে। কারও জন্য অপেক্ষা করছে সেটা পরিষ্কার। মাঝারি দূরত্বের একটা বেঞ্চে বসে থাকা উর্মিলার দিকে নজর রাখে পেছন থেকে। চোয়াল শক্ত করে সরাসরি উর্মিলার দিকে এগিয়ে যেতে থাকা ছেলেটাকে দেখল এবার রিয়াজ। স্কুলের ছাত্রই হবে। বয়স উর্মিলার থেকে বেশি হবার কথা নয়।
বিনাদ্বিধায় উর্মিলার পাশে বসে পড়লো হারামজাদা। কী যেন একটা বলতেই শুনে হেসে কুটি কুটি হয় উর্মিলা। উঠে পড়তে যাচ্ছিল রিয়াজ – মাথায় আগুন ধরে গেছে ওর। স্কুলের একটা বাচ্চার সাথে প্রেম?
পরমুহূর্তে নিজেকে থামাল ও, বয়ফ্রেন্ডের সামনে ‘সীন ক্রিয়েট’ করলে মেয়েটা বিগড়ে যাবে আরও বেশী। একে টাইট দিতে হবে – তবে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বের করে। নিউট্রাল গ্রাউন্ডে নিয়ে।
‘তুমি আজ বাসায় আসো’ – দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলে রিয়াজ।
ঝড়ের বেগে বেরিয়ে যায় ও পার্কটা থেকে।
আরও কিছু দেখতে গেলে আর নিজেকে আটকাতে পারবে না – জানে।
✭
হাসিমুখে উর্মিলা ঘরে ঢুকতেই রিয়াজের শীতল কন্ঠস্বর শোনে বেচারি, ‘তুই আমার রুমে আয়। এখনই!’
পাঁচ মিনিট পর অপরাধীর মত মুখ করে রিয়াজের সামনে দাঁড়ায় মেয়েটি।
‘স্কুল ছুটির পর বাসায় আসতে প্রতিদিন দেড় ঘন্টা করে লেট হয় কেন তোর?’ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থেকে প্রশ্ন করে রিয়াজ।
‘কাজ ছিল।’ মিনমিন করে কৈফিয়ত দেয় উর্মিলা।
‘কি কাজ?’
‘ছিল একটা।’ এড়িয়ে যায় উর্মিলা।
‘রোজ তোর কি কাজ থাকে?’ এবার ল্যাপটপের ডালা নামিয়ে বোনের দিকে ঘুরে তাকায় রিয়াজ। ’কোথায় ছিলি এতক্ষণ?’
‘আমাদের ক্লাব থেকে শীতার্তদের জন্য শীতবস্ত্র সংগ্রহের কাজ করছি। গত কয়েকদিন তাই একটু দেরী হচ্ছে। ’
‘মিথ্যা বলতেও শিখিস নাই ঠিকমত। আমি যদি বলি তুই পার্কে ছিলি?’
‘ছিলামই তো!’ অকপটে স্বীকার করে উর্মিলা। ‘রাশেদের কাছে সংগ্রহের সব টাকা ছিল। ওখান থেকেই আজ চাদরের বিল পরিশোধ করে দিয়ে আসলাম।’
দ্বিধায় পরে গিয়ে বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে রিয়াজ। পার্স থেকে একটা স্লীপ বের করে দেয় তখন উর্মিলা।
‘বিশ্বাস করছিস না – তাই তো? এই যে দেখ। ’
স্লীপটা যেন উর্মিলার কথার সত্যতা ঘোষণা করছে।
‘কিন্তু – ’ মানতে পারে না রিয়াজ।
‘কেনই বা রাতে আমার রুমে কথা শুনতে পাস আর মোবাইলে এত সময় কেন দেই ইদানিং – সেই সাথে আমার দেরী করে বাড়ি ফেরার একটা সম্পর্ক খুঁজে নিয়েছিস – তাই না?’
রিয়াজ বোঝার চেষ্টা করে ব্যাপারটা ঠিক কোনদিকে এগুচ্ছে।
‘আসলে – আমার ভাইটা কখন কখন যে এতবড় হয়ে গেল –টেরই পেলাম না। হঠাৎ – একেবারেই হঠাৎ তুই কেমন যেন দূরে সরে গেলি। তোর নতুন জগত – ওই জগতে ওর আমার ঢোকার সুযোগ নেই। তাই একটু স্পাইং করতে হল বাধ্য হয়ে। ’
‘আমার ওপর স্পাইং করেছিস – মানে? কি বলতে চাস?’
‘জানতাম আমার মধ্যে ঠিক কি কি বৈশিষ্ট্য দেখতে পেলে তুই টেনশনে পড়ে যাবি – তারপর ক্লাবের কাজে একটু দেরী তো হচ্ছেই – দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে ঠিক আমাকে ফলো করতে বের হবি।’
‘তাতে তোর কি লাভ?’
‘নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল। টেনশনে থেকে তোর রিঅ্যাকশন দেখে।’ সরাসরি ভাইয়ের চোখের দিকে তাকায় উর্মিলা, ’তুই সিগারেট খাস কেন, ভাইয়া?’
বিচারকের আসন থেকে নিজেকে আসামীর কাঠগড়ায় দেখতে পেয়ে বেকুব বনে যায় রিয়াজ …

রচনাকাল : ২০শে ডিসেম্বর ২০১৩

 

গল্প রহস্য

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

কোয়াড কোড

Posted on October 24, 2023

শটগান শেলকে পাত্তা না দিয়ে দোতলায় এই মাত্র উদয় হওয়া পিচ্চি সাবমেশিনগানধারীর দিকে তিনবার ট্রিগার টানলাম। সিঙ্গেল শট মোডে নিয়েছি হাতের CZW9।

Read More

অনিকেত মানব

Posted on June 30, 2023June 30, 2023

কেউ একজন ঘরে ঢুকছে, খেয়াল করে সেদিকে মুখ ঘোরালাম।

দমকা হাওয়ার মত কন্ট্রোল রুমে ঢুকে পড়া প্রাণিটার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকি আমি।

মিনিওন অবশ্য স্বাভাবিকভাবে তার দিকে ঘুরে তাকায়, ‘ফ্রেয়লিন সিখিনিকুয়াস জিজিন রাতে, দ্রানিয়াল তিতিনা।’

প্রাণিটি আমার দিকে ঘুরে তাকায়, ‘দেনামি হায়রাতিন কিলিমনাজির?’

মিনিওন হাসার মত একটা শব্দ করল, ‘সারিফিনি ফ্রাতিন ভাবার।’

তারপর আমার দিকে ফিরে ক্ষমাপ্রার্থনার সুরে জানালো, ‘দুঃখিত, আপনাকে উনি নিম্নপ্রজাতির রোবট ভেবেছিলেন।’

Read More

স্ল্যাং

Posted on February 20, 2023

টাকা মানুষকে শ্রেণিতে ভাগ করে। আর ক্ষুধা আনে এক কাতারে।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

009435
Total Users : 9435
Total views : 23711
Who's Online : 1
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes