Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

Chapter II. HEROES & VILLAINS | Evolution from Hate to Acceptance of Israel

Posted on October 11, 2023

অধ্যায় ০২ নায়ক ও খলনায়কেরা

পত্রিকায় দেখলাম ইয়াসির আরাফাত বলে কেউ একজন মারা গেছে। খুব হা-হুতাশ পড়ে গেল পরিচিতদের মধ্যে। ইয়াসির আরাফাত নামটা প্রথম শুনলাম। তিনি নাকি নোবেলও জিতেছিলেন। কেউ কেউ নাক সিঁটকে বললো নোবেল তারাই পায় যারা মুনাফেক এবং ভণ্ড। ইয়াসির আরাফাত অনেকের কাছে নায়কের মর্যাদা পেলেও কেউ কেউ তাকে খলনায়ক মনে করেন বলে জানলাম।

একটা মানুষ যে একই সাথে নায়ক ও খলনায়ক হতে পারে তেমন বুদ্ধি আমার ঐ বয়সে ছিল না। ইয়াসির আরাফাত থেকেই তা জানতে পারলাম। মুসলমানদের অনেকের মুখে কালো কালো ছায়া। তাদের বদ্ধমূল ধারণা ইজরায়েল তাকে মেরে ফেলেছে। ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করার আগে তিনি শেষ দুটো বছর একরকম ইজরায়েলের চব্বিশঘণ্টা নজরদারীতেই ছিলেন।

ইয়াসির আরাফাত নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার সময় অবশ্য মুসলিম উম্মাহর তখন ছিল না। ইরাকে আমেরিকার যুদ্ধের কথা আমার মনে আছে। পত্রিকায় আরেকটি নাম ঘন ঘন দেখা যেতে থাকলো। নামটি হচ্ছে সাদ্দাম হুসাইন।

একটি ছবি আমার মনে দাগ কেটেছিল। বাগদাদে একের পর এক বোমা আছড়ে পড়ছে। অন্ধকার, বোমার আলো, আর তাতে পাকিয়ে ওঠা ধোঁয়া ছিল সেখানে। খুব মন খারাপ করানো একটি দৃশ্য। ইরাকে আমেরিকা যে উইপন অফ মাস ডেসট্রাকশনের কথা বলে আক্রমণ করেছিল তা বিশ্বাস করার মতো মানুষ তেমন পাওয়া গেল না। আল-কায়েদা, যারা টুইন টাওয়ার ধ্বংস করেছিল – তাদের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সাদ্দাম হুসাইনকে দোষী ঠাউরানো হলো, তাও খুব একটা ভরসাযোগ্য ছিল না।

বাগদাদের ওই মন খারাপ করিয়ে দেয়া ছবিটির সময় জানতাম না, তবে ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা জানতে পারি সেই তিন সপ্তাহব্যাপী ভয়ানক আক্রমণে আমেরিকা ২৯ হাজার ১৬৬টি বোমা ও রকেট ইরাকে ফেলেছিল। আক্ষরিক অর্থেই তামা তামা করে দিয়েছিল শহর-নগর-বন্দর। সাত হাজারের বেশি সিভিলিয়ান মারা যায় ঐ অল্প সময়ে। আমেরিকা যে কিলিং মেশিন হিসেবে বিশ্ব-চ্যাম্পিয়ন এটা মানুষ জানে এবং মনে রাখে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এতগুলো বছর পরও তাদের চর্চায় মরচে ধরেনি, বরং আরও দক্ষ হয়েছে – এমনটাই প্রমাণিত হলো। এই যুদ্ধটি আমেরিকার মানসিক জোর অনেক বাড়িয়ে দিলেও আমার বিশ্বাস সৈনিকদেরটা কমিয়েছিল ততোধিক। যে কারণে আফগানিস্তানে তাদের পরাজয়টা চূড়ান্ত হয় আরও বিশটি বছর পর।

নির্মোহভাবে দেখলে ইরাকে আমেরিকার মিশন শতভাগ সফল, আফগানিস্তানেও। তবে ইরাকে আক্রমণের পেছনে আমি জোরদার কারণ ঐ বয়সেও দেখিনি, এখনো দেখি না। আমার চিন্তাধারায় পরিবর্তন হয়েছে অনেক, তবে ইরাকে আমেরিকার আগ্রাসী আক্রমণটিকে আমি একটি অন্যায় আগ্রাসন বলেই আজও মনে করি। ওই সময়ের আরেকটি ঘটনা আমার মনে আছে। আপনাদের কারো কারো মনে থাকতে পারে। আলপিন ইরাক যুদ্ধকে কেন্দ্র করে একটি খেলা বের করলো। লুডুর ছক্কা দিয়ে খেলাটি খেলতে হতো। সাপ-লুডুর মতো বিভিন্ন সংখ্যা দেয়া ছিল ওখানে। আপনি ছয় তুলতে পারলে অমুক করবেন, নয়তো পিছিয়ে যাবেন তমুক শহরে। যতদূর মনে পড়ে খেলাটি ইরাকের পক্ষেই ছিল এবং আপনি শেষমাথা পর্যন্ত যেতে পারলে ইরাক জিতবে এমন কিছু ছিলো।

আমেরিকা তাকে বলেছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতে, নয়তো ইরাক তামা তামা করা হবে। তারা আরও যোগ করেছিল সাদ্দাম চলে গেলেও, নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত করার এবং ‘উইপন অফ মাস ডেস্ট্রাকশন’ খোঁজার মহৎ(!) স্বার্থে তাদের ইরাকে আসতেই হবে। তবে যুদ্ধসহ তারা ঢুকবে নাকি যুদ্ধ ছাড়া এটির সিদ্ধান্ত সাদ্দাম হুসাইনের। তখন সাদ্দাম একটি বীরোচিত কাজ করলেন। শক্ত গলায় বললেন প্রাণপ্রিয় ইরাককে তিনি বিদেশী শক্তির হাতে ছেড়ে দেবেন না। পারলে যেন আমেরিকা এসে গায়ের জোরে নিয়ে যায়। এই দৃঢ়চেতা মনোভাব তাকে রাতারাতি বিশ্বের সামনে নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, ঠিক যেমনটা অনেকগুলো বছর পর করেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে। তাছাড়া রকেট লঞ্চার হাতে সাদ্দাম হোসেনের একটি ছবি সেই যুগেও ভাইরাল হয়েছিল। তাকে নায়কের বেশে এবং নায়কের অস্ত্রেই আমরা তখন দেখতে পাই। কিন্তু সাদ্দাম হোসাইনের হুংকার ফাঁকাতে গেল না, বুশ প্রশাসন তার এই আহ্বানে পাই পাই করে সাড়া দিলো।

ইরাকে আমেরিকা মে মাসের ২০ তারিখে তীব্র আক্রমণ করে। সাদ্দাম হোসেন তার স্বভাবসুলভ লড়াকু ভঙ্গিতে আঙুল উঁচিয়েই বললেন ইরাকের জনতা, তোমরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমেরিকা এবং ব্রিটিশদের এই বাহিনীকে সাইজ করে দাও। ইরাক বাইরের কেউ নেবে না। তিনি তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে গেলেন। কুয়েত এবং জর্দানের সাথে পাছা মারামারির যে ব্যয়বহুল ব্যর্থ খেলায় তিনি কিছুদিন আগে মেতে উঠেছিলেন তা যেন সবাই ক্ষমা করে দিতে একেবারেই প্রস্তুত। কিন্তু পাশার দান উল্টে যেতে বেশিক্ষণ লাগলো না।

বিশ্বের সামনে সাদ্দাম হুসাইন ধূমকেতুর মতো ঈশাণকোণে নায়কের ভূমিকায় এলেন এবং বিজলীর চমকের থেকেও দ্রুততার সাথে কেবলমাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে হম্বিতম্বি বাদ দিয়ে জান নিয়ে ভাগলেন। তাকে শেষটায় আমেরিকা ধরে ফেলে এবং ফাঁসীতে ঝোলায়। ২০০৬ সালে ঐ ঘটনাটিও বেশ আলোড়ন তোলার মতো ছিল। বিশ্বকাপ ফুটবল জ্বর ছাপিয়ে বছরের শেষটা এই বিষয়েই আলোচনা হলো। যতদূর মনে পড়ে সাদ্দাম হুসাইনের ফাঁসীটি টেলিভিশনে প্রচারিতও হয়েছিল, তবে একেবারে ঝুলিয়ে দেয়ার মুহূর্তটি তারা আর দেখায় না।

স্কুলে তখন নানা রকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আমরা ছেলেরা বের করতাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল আমেরিকা প্রকৃত সাদ্দামকে ধরতে পারেনি। যে আমেরিকার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে, সাহস দেখিয়ে লড়তে পারে, তাকে ধরে ফেলা এত সহজ কাজ নয় তা আমরা মনে করতাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল সাদ্দামের ‘বডি ডাবল’কেই ওরা ঝুলিয়েছে।

সাদ্দাম হুসাইন যখন অনেকের কাছে প্রবাদপুরুষে পরিণত হয়েছে, তখন দেখলাম একশ্রেণির মানুষ কানাকানি করে কিছু একটা বলতে চায়। তাদের কথা হচ্ছে, সাদ্দাম যতই যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিক সে তো নাস্তিক প্রকৃতির লোক। বামপন্থী মানসিকতা আর সেকুলারিজম তার মধ্যে ছিল। ভালো মুসলমান সেকুলার কেন হবে? তাছাড়া দাড়ি নেই যার সে আবার কেমন মুসলমান নেতা? সে তো ভণ্ড – এই ছিল সেসব বাঙালির চূড়ান্ত রায়।

আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমেরিকা সেকুলার। সাদ্দামও সেকুলার। তাহলে এরা একজন আরেকজনের মাথা ফাটালো কেন তা ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া আমি আর বুঝে উঠতে পারি না। সব কিছু আমার কাছে ঘোলাটে মনে হয়। তবে তখন আমি বা আমার বয়েসী অধিকাংশ ছেলেমেয়ে যে তত্ত্বটি মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলাম তা হলো – আমেরিকা তেলের লোভেই সাদ্দাম হুসাইনকে তাক করে এমন একটি অন্যায় যুদ্ধ করেছে। এত বছর পরও আমেরিকার সেই যুদ্ধটি যে অন্যায় ছিল তা নিয়ে আমার কোন সংশয় নেই। তবে ক্লাস সেভেনের আমি হতবাক হয়ে দেখলাম আরও একবার একই মানুষের সাথে এমনটা হচ্ছে।

মানুষকে নায়ক বানিয়ে দেয়া হচ্ছে, আবার চটজলদি তাকে অনেকে খলনায়কের কাতারে ফেলতে মোটেও কসুর করছে না। এসব কীসের আলামত! আমার চিন্তার জগত এলোমেলো হয়ে যায়।

তারপর আমি বুঝতে পারলাম নায়ক আর খলনায়কের ভূমিকাটি কেবলমাত্র চলচ্চিত্রের পর্দায় গ্রহণযোগ্য। বাস্তবজীবনে কেউ কখনো কেবল নায়ক বা খল-নায়ক হতে পারেন না। কিছু করলে দুটোই হয় তারা, নির্ভর করে কোন দলটি তার ব্যাপারে কথা বলছে। তখনও আমি ‘প্রতি-নায়ক’ বলে যে একটি শব্দ আছে সে ব্যাপারে একেবারেই ওয়াকিবহাল নই। কাজেই সঠিক শব্দের অভাবে আমি খাবি খেতে থাকলাম।

বাংলাদেশের মানুষ অবশ্য একটি বিষয় নিয়ে একেবারেই দ্বিমত রাখতো না। তাদের বিশ্বাস ছিল সাদ্দাম হুসাইন দেশপ্রেমিক হোক আর আমেরিকার দালাল হোক, সেকুলার হোক চাই কি না হোক, নায়ক হোক কিংবা খলনায়ক হোক; প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যে খলনায়ক এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকে না।

মানুষ গায়েব জানে না। কাজেই মাত্র পনেরোটি বছর পর আমি যে টেক্সাসে পা রাখবো এবং টেক্সান বুশ পরিবার এখানে কী পরিমাণ জনপ্রিয় তা ধীরে ধীরে জানতে শিখবো, গভর্নর হিসেবে জর্জ ডব্লিউ বুশকে অস্টিনের ক্যাপিটলের ভেতরে ঝুলতে দেখবো ছবি হয়ে এবং জানবো তিনি যতজনের কাছে না খলনায়ক ছিলেন, তার থেকে অনেকগুণ বেশি মানুষের চোখে ছিলেন নিরেট নিপাট একজন নায়ক, সে অনেক পরের গল্প।

আমার কিশোর চোখের সামনে তখন বাংলাদেশের মানুষ আরও একবার রঙ বদলাতে শুরু করেছে। আমাদের সামনে আবির্ভূত হলেন আরেকজন নায়ক কিংবা খলনায়ক। হয়তো প্রতি-নায়ক। তবে এবার ঘটনাটি কি না ঘটলো খোদ আমেরিকা থেকে!

(চলবে) 

ডায়েরি নন-ফিকশন

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা | অধ্যায় ০৩ – শুরু থেকে শেষটা ঝাপসা জানা

Posted on August 2, 2021February 6, 2023

প্রথম রাতেই বেড়াল মারার যে আলাপ বাঙালি করেন, তা সব সময় সত্য হয় না। ঠিক যেমনটা করতে গিয়ে লটকে গেলো আমার রুমমেট উইল।

Read More
নন-ফিকশন

The Son of Bangladesh: KP’s Voice for the Marginalized

Posted on November 9, 2025

In his latest, most daring creative endeavor, Kishor Pasha Imon (KP Imon) transcends the boundaries of his acclaimed work in crime fiction to deliver a powerful socio-political and musical statement: “The Son of Bangladesh.”

Read More

অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Posted on February 5, 2024

বুদ্ধিজীবি সময় বদলে দেয় না কখনো। সঠিক সময় বুদ্ধিজীবিদের একটা স্থান দেয়। একাত্তরে বর্তমানের বুদ্ধিজীবিরা থাকলে তারা নতুন একটি দেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখতেন। ২০২৩ সালে তারা হয়তো রপ্তানিযোগ্য ছাত্র তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন। এতে করে তাদের মেরিট নেই হয়ে যাচ্ছে না।

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • The Son of Bangladesh: KP’s Voice for the Marginalized
  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া

Analytics

010188
Total Users : 10188
Total views : 25300
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes