Skip to content
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

  • গুহামুখ
  • সূচিপত্র
  • গল্প
    • রম্য
    • জীবনধর্মী থৃলার
    • সাইকোলজিক্যাল
    • রোমান্টিক
    • ক্রাইম
    • সাসপেন্স
    • জীবনধর্মী
  • নন-ফিকশন
    • থট প্রসেস
    • উচ্চশিক্ষা
    • আমেরিকা-নামা
    • জীবনোন্নয়ন
    • তাত্ত্বিক আলোচনা
    • ডায়েরি
  • প্রকাশিত বইসমূহ
    • প্রকাশিত বইসমূহ
    • যেসব গল্প সংকলনে আছে আমার গল্প
KP Imon
KP Imon

Words Crafted

ক্ষিধে

Posted on July 3, 2022

হেডলাইটের আলো দেখে আড়ালে সরে যায় ইরিনা। পুলিশ বা র‍্যাবের গাড়ির সামনে পড়া চলবে না।

আজ সারা রাতেও শিকার পায়নি ও। পেটে অসম্ভব ক্ষুধা। অলরেডী সাড়ে এগারটা বাজে। রাত বারোটার মধ্যে কাওকে না পাওয়া গেলে বিপদ হয়ে যাবে। মনিপুর এলাকাটার রাস্তাঘাট যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর বলেই যা ভরসা। 

ভাগ্যটা মনে হয় ততটা খারাপ না ইরিনার জন্য। গাছের নীচে সিগারেট টানতে দেখা যায় এক তরুণকে। 

হাতে আলতো করে আরেকবার স্প্রে করে ইরিনা। ইটস শো টাইম। 

‘এক্সকিউজ মি।’ চার হাতের মধ্যে এসে মুখ খোলে ও, এটাকে ও বলে’ডিসট্র্যাকশন স্টেপ’। ’চব্বিশ নম্বর বাসাটা কোন দিকে বলতে পারেন?’

সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায় ছেলেটা। ’সম্ভবতঃ ডানদিকের রাস্তা ধরে গেলে পাবেন। ’

‘নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না?’ হাত নাড়ে ইরিনা হতাশার ভঙ্গীতে। ’ইনফিল্ট্রেশন স্টেপ’।

‘সরি আপু, আমি এখানে থাকি না। আন্টির বাসায় এসেছিলাম। আপনাকে একটু খুঁজে নিতে হবে’ বলতে বলতেই টলে ওঠে তরুণ। 

পড়ে যাওয়ার আগেই ধরে ফেলে ওকে ইরিনা। আলতো করে গলায় দাঁত বসিয়ে দেয়। দাঁতের নীচে গরম প্রবাহিত রক্ত ওর ক্ষিধেটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। পাগলের মত রক্ত খেয়ে চলে ও। হাল্কা ধাক্কা দেয় ছেলেটা। কিন্তু ক্লোরোফর্মের প্রভাবে শক্তি বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই তখন তার। আরও জোরে ওকে চেপে ধরে বুক ভরে টান দেয় ইরিনা। বেশি সময় নেওয়া যাবে না। কেউ চলে আসলে বিপদ। 

পেট কিছুটা ভরতেই ছেড়ে দেয় ছেলেটাকে। কাটা কলাগাছের মত মাটিতে পড়ে যায় সে অসহায়ের মত। 

*

ইরিনা শখের ভ্যাম্পায়ার। প্রথমে ওর মাথায় যখন আইডিয়াটা আসে – তখন ভেবেছিল রক্তের মত জঘন্য জিনিস তার কিছুতেই সহ্য হবে না। কিন্তু প্রথম শিকারকে ধরার পর সম্পূর্ণ ধারণাটাই ভুল বলে প্রমাণিত হল। মানুষের রক্ত খাবার হিসেবে ততটা খারাপ নয় – যতটা লাগে দেখতে। নোনতা-মিষ্টি একটা স্বাদ। 

কিন্তু শিকারের সংখ্যা দশকের ঘরে পৌঁছতে পৌঁছতে নেশা ধরে যায়। মানুষের শরীরের প্রবাহিত রক্ত ছাড়া কিছুতেই স্বাদ পায় না ইরিনা। ফিরে আসতে যে ইচ্ছে হয়নি তার – তেমনটাও নয়। কিন্তু একবার মানুষের রক্তের নেশা ধরে গেলে ছাড়ার সাধ্য কি আর থাকে? হেরোইনের নেশার চেয়েও ভয়ংকর এ নেশা। 

শিকার থেকে দ্রুত রক্ত খেয়ে কেটে পড়ার জন্য নিজেই শিকার-পদ্ধতির কিছু নিয়মকানুন বের করেছে। এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা যেমন কমে – পুরো ব্যাপারটা অতি অল্প সময়ে ঘটিয়ে ফেলাটাও হয় সহজ। 

প্রথমত হাতের আঙ্গুলে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করে নেয় ও। তবে ভুলেও এই হাত নিজের নাকের সামনে আনা চলবে না। কথার ছলে একবার জায়গা মত হাত নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, মুখের চারটি চোখা দাঁতের মাথায় বিশেষভাবে বসিয়ে নিয়েছে ও সুহ্ম চারটি পিন। অতি সহজে ফুটো করে ফেলা যায় ধমনী। তৃতীয়তঃ নিজেকে আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে বের হতে হয়। ছেলেদের অন্যমনস্ক করে ফেলাটা সহজ এভাবে, যার অর্থ – নাকে ক্লোরোফর্ম ধরার মত দূরত্বে আসা সহজ।

এবং অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে ধরার পড়ার ক্ষেত্রগুলো আইডেন্টিফাই করাটা সহজ হয়ে গেছে। প্রথমে ও রোজ রাত দশটায় বের হত। হাঁটত স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিকের মত। তবে একদিন বিপত্তি ঘটেই গেল। 

গত তিনদিন কোন শিকার পায়নি তখন ইরিনা। রাজ্যের ক্ষিধে পেটে। পৌনে বারোটায় পুলিশের গাড়িটাকে পাত্তা না দেওয়ার ফলাফল হাতেনাতেই পেয়ে যায় ইরিনা। 

ঘ্যাচ করে ব্রেক কষে লাফিয়ে নামে অফিসার। পেছনে বসে থাকে চার কনস্টেবল।

‘কোথায় যাওয়া হচ্ছে?’ জলদগম্ভীর কন্ঠে বলে মোটাসোটা পুলিশ অফিসার। 

‘নান অফ ইয়োর বিজনেস।’ ক্ষুধার চোটে মেজাজ ঠিক রাখা সম্ভব হয় না ইরিনার পক্ষে। 

‘স্মার্ট মাল, অ্যাঁ?’ তরল কন্ঠে বলে পুলিশ। ’এলাকায় নতুন মনে হচ্ছে। কার হয়ে কাজ কর?’

‘আমি কারও হয়ে কাজ করি না।’ ভাববাচ্য থেকে পুলিশ অফিসারের সরাসরি’তুমি’-এ নেমে যাওয়া দেখে পরিস্থিতি আঁচ করে কিছুটা। 

‘বাহ! তা – এ লাইনে নতুন বলেই বুঝতে পার নি, সুন্দরী। আমাদের রাস্তায় ব্যাবসা করবা ভাল কথা। কিন্তু রাস্তা যে আমরা পরিষ্কার রাখছি – সেটা কিন্তু ফ্রিতে না। দিনে কত করে দিচ্ছ সেটা ক্লিয়ার কর এখানে নাহয় থানার দরজা খোলায় আছে। গাড়িতে ওঠো। ’

বিষয়টা স্পষ্ট হয় ইরিনার কাছে। পতিতা বলে তাকে সন্দেহ করা হয়েছে। ঘাবড়ায় না ও মোটেও। মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে চোখ টিপ দেয়, ’দেনা-পাওনার হিসেবটা কি এদের সামনে না করলেই নয়?’ ইঙ্গিতে গাড়িতে বসে থাকা কন্সটেবলদের দিকে দেখায় ও। 

ইরিনার চোখের দিকে তাকিয়ে ঢোক গেলে পুলিশ অফিসার। এরকম সুন্দরীকে এ লাইনে আসার উদাহরণ কমই দেখেছে সে। 

‘তোমরা আরেক রাউন্ড দিয়ে এসে আমাকে এখান থেকে উঠিয়ে নিও।’ হাতের ইশারায় ড্রাইভারকে কেটে পড়তে বলে অফিসার। 

রাতের অন্ধকারে মিশে যায় ইরিনা আর অফিসার। 

আড়াল পেয়েই শিকারের গলা লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইরিনা। ক্লোরোফর্ম ব্যাবহারের কথা মাথায় থাকে না আর। 

তিনদিনের ক্ষিধে পেটে পাগলের মত রক্তও টেনে চলে। মিনিট পাঁচেক পর রক্ত আর আসে না মুখে। 

তবুও টানে ইরিনা। 

পায় না কিছুই। 

পালস চেক করে থমকে যায়। নেই। 

*

শিকারের রক্ত খেয়ে একেবারে মেরে ফেলার ঘটনা সেটাই প্রথম ছিল। 

এরপর থেকে আরও সতর্ক হয়ে যায় ইরিনা। প্রতিদিন একটা শিকার লাগবেই ওর। নাহলে তিনদিন পর কাওকে ধরলে জান বের করে ফেলবে!

গত কয়েক মাস ধরে শুধু রক্তের ওপরই বেঁচে আছে ও। চেষ্টা করে দেখেছে সলিড কিছু খাওয়ার। 

পেটে আর সহ্য হয় না। বমি হয়ে বের হয়ে যায় সব। 

আজ রাতে প্রথম শিকার পেলেও পেটের ক্ষিধে মেটেনি ইরিনার। 

আরেকটা শিকার পেলেই আজকের মত খাবারের চিন্তা দূর করে ফেলতে পারবে ও।

দূরে আরেক বাড়ি সংলগ্ন কংক্রিটের বসার জায়গায় বসে থাকতে দেখে আরেক তরুণকে। 

এই বয়েসী ছেলেগুলো শিকার হিসেবে খুবই ভাল হয়। সহজেই সৌন্দর্য্যের ফাঁদে ফেলা যায় এদের। 

কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গলায় কিছুটা বিস্ময় তুলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় ইরিনা, ’আরে! আরিফ! তুমি এখানে কি করছ?’

ডিসট্র্যাকশন। 

‘সরি আপনি ভুল করছেন।’ ভ্যাবাচেকা খেয়ে উঠে দাঁড়ায় তরুণ। ’আমার নাম আরিফ না। ’

‘সরি। এখন বুঝতে পারছি।’ দুঃখপ্রকাশ করে ইরিনাও। ’বসে থাকা আপনাকে আমার এক বন্ধুর মতই লাগছিল। ’

‘ইটস ওকে।’ অপ্রস্তুত হাসি দিয়ে মাথা চুলকায় ছেলেটা। ইনফিলট্রেশন। 

মাথা ঘুরে ওঠে ইরিনার। কিন্তু ও পড়ে যাওয়ার আগেই ওকে ধরে ফেলে তরুণ। 

আলতো করে দাঁত বসিয়ে দেয় ইরিনার গলায়।

পেটে তার তিনদিনের জমে থাকা ক্ষিধে …

সাসপেন্স

Post navigation

Previous post
Next post

কিশোর পাশা ইমন

১২টি ক্রাইম থৃলারের লেখক কিশোর পাশা ইমন রুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এখন টেক্সাস ষ্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেছেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। বর্তমানে টেক্সাসের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইউটি ডালাসে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডির ছাত্র। ছোটগল্প, চিত্রনাট্য, ও উপন্যাস লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তার বইগুলো নিয়ে জানতে "প্রকাশিত বইসমূহ" মেনু ভিজিট করুন।

Related Posts

আলকেমি

Posted on July 2, 2014July 3, 2022

আড়চোখে একবার স্নিগ্ধকে দেখে উজ্জ্বল। ছেলেটা এক ওয়াক্ত নামাজও মিস দিত না একসময়।
এখন সে আলকেমি ছাড়া কিছু বোঝে না।
কিচ্ছু না।

Read More

ট্রিপল এ

Posted on February 13, 2023

শহর জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে বেড়ানো সিরিয়াল কিলার ট্রিপল-এ কি এবার আমাকেই তার পঞ্চম ভিক্টিম হিসেবে বেছে নিয়েছে?

Read More

খারাপ মেয়ে

Posted on May 25, 2023May 25, 2023

কোন রকম আগাম সংকেত না দিয়েই হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে হোটেল রুমের দরজাটা।
উজ্জ্বল টর্চের আলো ফেলে ঘরে ঢুকে পড়ল চার-পাঁচজন মানুষ। প্রতিটা আলো ফেলা হয় ওদের চেহারাতে।
‘মাগীর হুক দেখো!’ গর্জন করে ওঠে ওদের একজন, ‘কাস্টোমার ছুইটা গেছে – সেই ফাঁকে ফ্রিতে ক্ষ্যাপ মারতাছে।’

Read More

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ লেখাগুলো

  • ওয়ান ফর মাই সৌল
  • আমার যত প্রকাশক
  • কেপির সেরা লেখা কোনটি – জরিপ ২০২২
  • আন্ডারএইজের বই পড়া
  • অমুক পড়ে আসেন… সমস্যাবলী

Analytics

009877
Total Users : 9877
Total views : 24721
Who's Online : 0
Powered By WPS Visitor Counter
©2025 KP Imon | WordPress Theme by SuperbThemes